Fire Brigade

জীবন বাঁচিয়েও ‘বিপন্ন’ অস্থায়ী দমকলকর্মীরা

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দমকলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার এএফপি বা দমকল সহায়ক কাজ করেন।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২১ ০৬:০৮
Share:

দমকলের দফতরের সামনে বিক্ষোভ অস্থায়ী দমকল কর্মীদের। মঙ্গলবার ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে। —নিজস্ব চিত্র

আগুনে বিপন্ন মানুষকে নিরাপত্তা দিতে জীবন বিপন্ন করেন ওঁরা। কিন্তু তাঁদের চাকরির নিরাপত্তাটুকুও নেই! এই অভিযোগেই মঙ্গলবার মির্জা গালিব স্ট্রিটে দমকলের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন দমকল সহায়ক বা অগজ়িলিয়ারি ফায়ার পার্সনদের একাংশ। তাঁরা জানান, গত এক বছরে বিভিন্ন ঘটনায় ছ’জন দমকল সহায়কের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে কয়লাঘাটে আগুন নেভাতে গিয়ে মৃতের তালিকায় রয়েছেন তিন জন দমকল সহায়ক। সূত্রের খবর, সেই ঘটনাই ক্ষোভের আগুন উস্কে দিয়েছে এই কর্মীদের মধ্যে।

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দমকলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার এএফপি বা দমকল সহায়ক কাজ করেন। এঁরা মূলত অস্থায়ী কর্মী। স্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে কাজের ক্ষেত্রে কোনও ফারাক নেই। কিন্তু বেতন বা অন্যান্য সুবিধায় প্রচুর ফারাক। এমনই চাকরি করতেন কয়লাঘাটে মৃত বিমান পুরকাইত, অনিরুদ্ধ জানারা। এ দিন দুপুরে তাঁদের সহকর্মীরা রীতিমতো ভেঙে পড়েছিলেন। বিশ্রামকক্ষে কেউ কাঁদছিলেন, কেউ বা থম মেরে বসেছিলেন। তেমনই এক সহায়কের কথায়, ‘‘কাল হয় তো ওঁদের মতো আমিও মৃতের তালিকায় থাকতে পারি!’’

দমকল সহায়কদের অভিযোগ, ২০১২ সালে কাজে যোগদানের পর আট বছর কেটে গেলেও বেতন কাঠামো বাড়েনি। স্বাস্থ্যবিমা চালু হয়নি। পর্যাপ্ত ছুটিও নেই। কাজে না এলে বেতন কাটা যায়। বারবার বললেও কেউ কথা কানে তোলেনি।

Advertisement

এ দিন সদর দফতরের সামনেই মৃত চার কর্মীর ছবি টাঙানো হয়েছিল। তার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের ‘বঞ্চনার’ কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন এক দমকল সহায়ক। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মাস কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের চাকরির সময়সীমা ষাট বছর পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। অথচ এখনও আমাদের ৮৯ দিন পর পর চাকরির জন্য পুনর্নবীরকরণ করতে হয়। আমরা বিপন্ন, আশঙ্কায় ভুগছি।’’

এ দিন বিকেলে দমকলের সদর দফতরে মৃত দমকলকর্মীদের স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, দমকলের ডিজি জাভেদ শামিম প্রমুখ। সেখানেও কেঁদে ফেলেন দমকলকর্মীরা। সেখানেই অবশ্য কর্মীদের ‘আশ্বাস’ দেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে ঘোষণা করেছেন তার
যাবতীয় সুবিধা ওঁরা পাবেন। সরকারি নির্দেশ কাযর্কর হতে একটু সময় লাগে। আমি ওঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement