ফাইল চিত্র।
ভাঁড়ারের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে, কোনও খাতে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ হাতছাড়া করা যাবে না বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। প্রক্রিয়া-পদ্ধতিতে ভুলচুক, ফাঁকফোকর থেকে গেলে টাকা হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। কেন্দ্রীয় অনুদানের নিয়ম বদলাচ্ছে হামেশাই। কোথাও কোনও ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে বরাদ্দ পেতে সমস্যা হতে পারে। সেই জন্য সব দফতরের আর্থিক উপদেষ্টাদের প্রশিক্ষণ দিতে আগামী শনিবার বৈঠক ডেকেছে অর্থ দফতর।
রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের কাছ থেকে আসা সব ধরনের আর্থিক অনুদানই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে প্রশাসন। এক অর্থকর্তা বলেন, “কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পেতে প্রক্রিয়াগত খুঁটিনাটি বিষয় নজরে রাখা জরুরি। ভুলভ্রান্তি মোটেই চলবে না। তাই ১৬ জুলাই প্রায় দিনভর প্রশিক্ষণ-বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কোনও প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পেতে গেলে এখন কেন্দ্রের পাবলিক ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (পিএফএমএস) মানতেই হচ্ছে। পিএফএমএসে যুক্ত হতে বলা হয়েছে সব দফতরকেই। পিএফএমএসের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করছে অর্থ দফতরও। প্রকল্প-ভিত্তিক বরাদ্দ পেতে ‘স্টেট নোডাল এজেন্সি’র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা-সহ একাধিক ‘মডিউল’ নতুন করে গড়তে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। এই সামগ্রিক ব্যবস্থাপনাই বোঝানো হবে আর্থিক উপদেষ্টাদের। এক কর্তা বলেন, “নির্ভুল ভাবে কোনও প্রকল্প খতিয়ে দেখা, সময়ের মধ্যে তার ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি থাকবে প্রশিক্ষণের আওতায়। অনেক আর্থিক উপদেষ্টা কাজে সদ্য যোগ দিয়েছেন। ফলে প্রত্যেককেই বিষয়গুলি বুঝে নিতে হবে।”
আর্থিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বরাদ্দ যাতে হাতছাড়া না-হয়, সেই বিষয়ে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে সব দফতরকেই। কোভিড-পরবর্তী পর্বে রাজ্যের আয় আগের মতো এখনও বাড়েনি। অথচ বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে বাড়তি বরাদ্দের দরুন খরচের বহর বেড়েছে। দফতরগুলির বাজেট বরাদ্দের অর্থ জোগাতে হবে নবান্নকে। তাই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বা কর্মসূচি ছাড়া অন্য কোনও বিষয়কেই অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হচ্ছে না আপাতত।
প্রশাসনিক সূত্রের ধারণা, এই দিক থেকে আর্থিক উপদেষ্টাদের দায়িত্ব বেড়ে যায়। কোন প্রকল্প কতটা জরুরি, তার আর্থিক বোঝা কতটা হতে পারে, কী ভাবে কোথা থেকে টাকার সংস্থান করা যায়— ইত্যাদি বিষয় দেখতে হয় তাঁদের। এক কর্তা বলেন, “অর্থ দফতরের অনুমোদনের জন্য কোনও ফাইল পাঠানোর আগে দফতরের আর্থিক উপদেষ্টা সেটি খতিয়ে দেখেন। সেই অফিসারের বক্তব্যের উপরে অর্থ দফতরের সিদ্ধান্ত অনেকাংশে নির্ভর করে। তাই প্রয়োজন এবং বাস্তব পরিস্থিতি, দু’টি দিকই নজরে রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। সেই বার্তাও হয়তো দেওয়া হবে আসন্ন বৈঠকে।”