জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্যাকেজে সন্তুষ্ট হয়ে জমি দিতে ইচ্ছুক, এমন ২৪২ জনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। সরকারি ঘোষণা অনুয়ায়ী জমিদাতারা ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন, সঙ্গে পরিবার পিছু চাকরির নিয়োগপত্র।
সম্মতিপত্র জমা দিচ্ছেন জমিদাতারা। মঙ্গলবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামিতে প্রস্তাবিত কয়লাখনির পক্ষে-বিপক্ষে নানা দাবির সংঘাত চলার মধ্যেই সরকারি প্যাকেজ অনুযায়ী জমি দিতে সম্মত হয়ে অঙ্গীকারপত্রে সই করলেন ওই এলাকার বেশ কয়েক জন জমি মালিক। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁরা সিউড়ি শহরে, ডিআরডিসি হলে এসে স্ট্যাম্প পেপারে সই করেন। জমি দিতে ইচ্ছুক এলাকার ৫০ জন আজ, বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে ক্ষতিপূরণের চেক নেবেন বলেও প্রশাসন সূত্রের খবর।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্যাকেজে সন্তুষ্ট হয়ে জমি দিতে ইচ্ছুক, এমন ২৪২ জনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। সরকারি ঘোষণা অনুয়ায়ী জমিদাতারা ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন, সঙ্গে পরিবার পিছু চাকরির নিয়োগপত্র। যাঁরা অন্যের জমিতে বসবাস করছেন, তাঁদের পাট্টা ও পরিবার পিছু চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হবে বুধবারই। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘প্রথম তালিকা থেকে ৪০ জন এবং দ্বিতীয় তালিকা থেকে ১০ জনকে বুধবার কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে চেক নেবেন। বুধবারই জেলায় কোথাও অনুষ্ঠান করে প্রশাসনের তরফে বাকিদের সেটা দেওয়া হবে।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, লক্ষ্য রাখা হচ্ছে, যাঁরা কলকাতা যাচ্ছেন তাঁদের অর্ধেক যাতে আদিবাসী মহিলা হন।
ডেউচা পাঁচামি প্রস্তাবিত কয়লা খনি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই পারদ চড়ছে জেলায়। ওই খনির বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ‘বিদ্বেষের রাজনীতি বিরোধী জনমঞ্চ’-এর প্রতিনিধিদের মারধর করে বোলপুরের রিসর্ট থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল দিন তিনেক আগে। রবিবার রাতে ডেউচার দেওয়ানগঞ্জে তৃণমূলের এক আদিবাসী নেতা-সহ কয়েক জনকে আটকে রাখা, মারধর করা, খুনের চেষ্টা -সহ একাধিক অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ডেউচায় যাওয়া বাম নেতা প্রসেনজিৎ বসু, স্থানীয় দুই আদিবাসী-সহ ৯ জনকে।
বিরোধী স্বরের মধ্যেই তৃণমূলও স্থানীয় আদিবাসী বাসিন্দাদের একাংশকে নিয়ে খনির পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বারবার আশ্বাস দিয়েছেন, জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। উপযুক্ত পুর্নবাসন প্যাকেজের বিনিময়ে জমি নেওয়া হবে। সেই শর্তেই জমি মালিকদের থেকে ঘোষণাপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সেই ঘোষণাপত্র যাঁরা আগেই প্রশাসনকে দিয়েছেন তাঁদেরই কয়েকজনকে এ দিন ডেকে পাঠানো হয়। অঙ্গীকারপত্রে সই করা জমি মালিক বুদ্ধদেব গড়াই, সনৎকুমার গড়াই, দিব্যেন্দু ঘোষালেরা বলেন, ‘‘আমাদের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, জমির কাগজ নিয়ে ডাকা হয়েছিল। আমরাও এসেছিলাম। সেখানে একটি সম্মতিপত্রে আমরা সই করেছি।’’