সূর্য ডুবতেই আমবাগানে আনাগোনা, ক্ষোভ গ্রামে

গ্রামবাসীর আশঙ্কা, এ দিন আমবাগানে উদ্ধার ওই মহিলাকে অন্য জায়গা থেকে নিয়ে এসে সেখানে খুন করা হতে পারে।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

ধানতলা (ইংরেজবাজার) শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:০৩
Share:

গণদাবি: পুলিশ সুপারকে ঘিরে গ্রামবাসীরা। বৃহস্পতিবার ইংরেজবাজারের ধানতলায়। নিজস্ব চিত্র

সূর্য ডুবতেই অন্ধকারে ডোবে সেই গ্রামের রাস্তাঘাট। শীতের সন্ধ্যায় পথবাতি-হীন ভাঙাচোরা সড়ক মুহূর্তে হয় জনবিরল। মালদহের ইংরেজবাজার থানার কোতোয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের ধানতলা গ্রামের ছবিটা এমনই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে ওই গ্রামেরই একটি নির্জন আমবাগানে অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলার অর্ধনগ্ন, দগ্ধ দেহ উদ্ধারের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ধানতলাবাসী অনেকের দাবি, সন্ধ্যা নামতেই গ্রামে অন্ধকারের সুযোগে বাড়ছে দুষ্কৃতীদের আনাগোণা। তাই সন্ধ্যার পরে নজরদারি, শিবিরের দাবিতে পুলিশকে ঘিরে এ দিন বিক্ষোভ দেখান উদ্বিগ্ন গ্রামবাসীরা। তাঁদের সমস্যার বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া।

ইংরেজবাজার শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে মালদহ-রতুয়া রাজ্য সড়কের ধারে কোতোয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের টিপাজা গ্রাম। সেখান থেকে ভাঙাচোরা পিচরাস্তা ধরে যেতে হয় ধানতলায়। গ্রামবাসীরা জানান, ওই আমবাগানের মধ্যে দিয়েই গিয়েছে গ্রামে যাওয়ার মূল রাস্তা। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি বেহাল। নেই পথবাতিও। অন্ধকার নামতেই বহিরাগত দুষ্কৃতীদের আনাগোনা শুরু হয়ে যায় গ্রামে। প্রকাশ্যে মদ্যপান থেকে শুরু করে আমবাগানের মধ্যে নানা অপরাধমূলক কাজকর্ম চলে।

Advertisement

গ্রামবাসীর আশঙ্কা, এ দিন আমবাগানে উদ্ধার ওই মহিলাকে অন্য জায়গা থেকে নিয়ে এসে সেখানে খুন করা হতে পারে। তাঁরা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালেও ওই আমবাগানে এক মহিলার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। তাঁকেও অন্য জায়গায় খুন করে ফেলে দেওয়া হয় ওই গ্রামে। গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, “শহর থেকে দ্রুত পৌঁছনো যায় এই গ্রামে। বিশাল আমবাগান থাকায় অন্ধকারে থাকে এলাকা। তার সুযোগ নেয় দুষ্কৃতীরা।” এ দিনের ঘটনায় পরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দা সুখীরাম দাস, সবিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘এলাকার অনেক মেয়েই স্কুল, কলেজ এবং টিউশন পড়তে শহরে যায়। অনেক সময় যাতায়াত করতে রাত হয়ে যায়। সব সময় ওদের সঙ্গে যাওয়া সম্ভব হয় না। এর পরে তো মেয়েদের বাড়ির বাইরে পাঠাতেই ভয় হচ্ছে।”

এলাকায় পুলিশি টহল, শিবির, বেহাল রাস্তা মেরামত, পথবাতির দাবিতে সরব হন গ্রামবাসীরা। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তরুণকুমার গোস্বামী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের তরফে বেহাল রাস্তা ঠিক করা সম্ভব নয়। তবে আলোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে কিছু এলাকায়।’’ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “এলাকায় টহলদারি বাড়ানো হবে। পুলিশের শিবিরের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement