গজলডোবার সেই জমি থেকে রাজ্যে সরকারের বসানো বোর্ড তুলে নেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
এক বছর পর অবশেষে নিজেদের জমিতে চাষ করার সুযোগ পেলেন উত্তরবঙ্গের গজলডোবার মিলনপল্লি এলাকার চাষিরা। ‘ভোরের আলো’ প্রকল্পে প্রস্তাবিত হেলিপ্যাড নিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চাষিদের সঙ্গে সরকারের গন্ডগোল চলছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘ভোরের আলো’ (পর্যটন হাব) গড়ার জন্য ইতিমধ্যেই ২১০ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার।
সম্প্রতি পর্যটন দফতর গজলডোবা থেকে কিছুটা দূরে বোদাগঞ্জের মিলনপল্লিতে ভোরের আলো প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত একটি হেলিপ্যাড, আবাসন এবং সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের জন্য আরও ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করার পরিকল্পনা করে। তারা রাজগঞ্জ ব্লকে জঙ্গল মহল মৌজার ৩৭-৩৮ নম্বর দাগে জমি অধিগ্রহণের জন্য গত সপ্তাহে মাপজোক শুরু করে। অধিগ্রহণের একটি বোর্ডও লাগিয়ে দেওয়া হয় সেখানে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়ে কৃষক অসন্তোষ। কৃষকদের অভিযোগ, ‘‘জমিতে ফসল রয়েছে আমাদের। বাদাম, কচু সব মাঠেই। অথচ পুলিশ আমাদের মাঠে যেতে দিচ্ছে না। ফসল মাঠে নষ্ট হচ্ছে। মাঠে যেতে গেলে পুলিশ আমাদের হুমকি দিচ্ছে, গ্রেফতার করবে।’’
গত শুক্রবার জমি জট কাটাতে ওই এলাকায় গিয়েছিলেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। কিন্তু বিক্ষোভের মুখে পড়ে তাঁকে ফিরে আসতে হয়। তাঁর কনভয় আটকে কালো পতাকা দেখান কিসান মোর্চা সমর্থিত ভূমিরক্ষা কমিটির সদস্যরা। কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, পাট্টা রয়েছে এ রকম কোনও কৃষকের জমি দেওয়া হবে না। এই প্রকল্পে একটি ফ্লাইওভার হওয়ার কথা। কিন্তু জমি জটের কারণে সেই প্রকল্প আটকে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: মৃত বাঘের চেয়ে আহত বাঘ বেশি ভয়ঙ্কর: বিজেপিকে হুঁশিয়ারি মমতার
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরা ঘুণাক্ষরেও কখনও জানতে পারেননি ওই জমি অধিগ্রহণ করা হবে। তিস্তা নদীর চর সংলগ্ন ওই জমি তিন ফসলি। ওই এলাকার মানুষ মূলত কৃষিজীবী। আন্দোলনকারীদের দাবি, বাম সরকারের আমলে ২০০০ সালে তাঁদেরকে ওই জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। ভূমি রাজস্ব দফতরের কাছে সেই সমস্ত নথিও রয়েছে। তা সত্ত্বেও পাট্টা পাওয়া কৃষকদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে বা তাঁদেরকে না জানিয়ে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে দেয় সরকার।