ফসলের ক্ষতি ছাড়াও মালদহে ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
করোনার প্রকোপের পর এ বার মালদহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ধাক্কা। মঙ্গলবার ভোর থেকে নিম্নচাপের ঝড়বৃষ্টিতে উত্তর মালদহ লোকসভার কেন্দ্রের চাঁচল,মালতিপুর,গাজল,পুরাতন মালদহ-সহ একাধিক ব্লকে বিঘার পর বিঘা জমিতে কয়েক কোটি টাকার ফসল নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত অসংখ্য কৃষক। মঙ্গলবার এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মালতিপুরের নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল রহিম বক্সি ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ভোর থেকেই রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো মালদহ জুড়েও ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ভারী বৃষ্টির সঙ্গে চলেছে শিলাবৃষ্টিও। এর জেরে নষ্ট হয়েছে ধান, পাট, সব্জির ক্ষেত-সহ একাধিক আমবাগান। ঝড়বৃষ্টি উড়ে গিয়েছে টালির চাল। ভেঙে পড়েছে একাধিক মাটির বাড়ি। হরিশ্চন্দ্রপুরের এক পাটচাষি মহম্মদ শামিম বলেন, “একে করোনার জন্য সাধারণ কৃষকেরা কাজ হারিয়েছেন। তার উপর এই ঝড়বৃষ্টিতে আমাদের পাটক্ষেতের ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মহাজনের কাছে ঋণ নিয়ে ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। সেগুলো সব নষ্ট হয়েছে। শুনেছি, ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের আওতায় কৃষকেরা শষ্যবিমার টাকা পাবেন। সরকারের কাছে অনুরোধ করছি কৃষকদের সেই টাকা যাতে দেওয়া হয়।”
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, ঝড়বৃষ্টির ফলে উত্তর মালদহের ৫-৬টি ব্লকের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। কৃষি দফতরের কর্মীরা ক্ষয়ক্ষতি রিপোর্ট তৈরি করছেন। ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ এখনও জানা না গেলেও কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার সকালে নিজের বিধানসভার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন মালতিপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল রহিম বক্সি। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষেরা বলছেন, বহু বছর পর এ রকম বিপর্যয় দেখা গেল। এলাকার বাসিন্দারা বেশির ভাগই কৃষিজীবী। ঝড়বৃষ্টিতে তাঁদের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ফসলের ক্ষতি ছাড়াও বহু মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে, টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। এলাকার মানুষদের পাশে থাকার সাধ্য মতো চেষ্টা করছি।” বিধায়ক জানিয়েছেন, ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে সরেজমিনে রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্যের কৃষি দফতরে পাঠানো হবে। কৃষকদের আর্থিক অনুদানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।