Sonali Majumder

‘ব্যাড সালসা’য় আমেরিকা মাতাচ্ছে বাগদার ভাগচাষির মেয়ে

সঙ্গী সুমনকে সঙ্গে নিয়ে তার নাচের পারফরম্যান্স এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২০ ০৪:৪৮
Share:

সোনালি মজুমদার। ছবি: টুইটার

কতটা পথ পেরোলে তবে বাগদা থেকে পৌঁছনো যায় লস অ্যাঞ্জেলেস? হিসেব বলছে, তেরো হাজার কিলোমিটারেরও কিছুটা বেশি। সেই পথ পেরিয়েই বাগদার মেয়ে সোনালি মজুমদারকে পৌঁছতে হয়েছে ভিন্ দেশে। আর তার এই স্বপ্নের উড়ানের চাবিকাঠি হল নাচ। ‘ব্যাড সালসা’ দলের হয়ে হদ্দ গ্রামের মেয়ে পনেরো বছরের সোনালি ‘আমেরিকা’স গট ট্যালেন্ট’ নামে জনপ্রিয় রিয়ালিটি শোয়ের মঞ্চ মাতিয়ে দিয়েছে ইতিমধ্যেই। সঙ্গী সুমনকে সঙ্গে নিয়ে তার নাচের পারফরম্যান্স এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।

Advertisement

অনুষ্ঠান মঞ্চে ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা সুমন জানান, সোনালির ভাগচাষি বাবার দিনে রোজগার এক ডলার। অর্থাৎ, ৭৫ টাকার কাছাকাছি। বছর কয়েক আগেও বিদ্যুৎ ছিল না সোনালিদের উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার সালুয়ারদাড়ির বাড়িতে। বাবা সন্ন্যাসী বলেন, ‘‘একটা সময় ছিল, যখন ঠিকমতো খাওয়া জুটত না আমাদের। কিন্তু নিজেরা না খেয়েও মেয়েটার যত্ন নিয়েছি। এখন মনে হয়, সেই কষ্টের মূল্যটুকুই পাচ্ছি।’’

তিন বছর যখন বয়স সোনালির, গ্রামের পথে মাইক বাজিয়ে আইসক্রিম ফেরি করত বিক্রেতা। ছোট্ট মেয়েটা সেই আইসক্রিমের গাড়ির গানের সঙ্গে আপনমনে নাচত। মেয়ের আগ্রহ দেখে গ্রামের নাচের শিক্ষিকা পিঙ্কি পালের কাছে তালিম নিতে পাঠিয়েছিলেন সন্ন্যাসী ও তাঁর স্ত্রী আলপনা। কিন্তু পরিবারের এমনই হাল, মেয়ে কত দূর এগোতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় ছিল।

Advertisement

আরও পড়ুন: লাদাখ সঙ্কট মিটতে সময় লাগবে: সেনা

সোনালির প্রতিভা সে বয়সেই সকলের নজর কাড়ে। সন্ন্যাসীদের যোগাযোগ হয়ে যায় কলকাতার লেক গার্ডেন্সে বিভাস চৌধুরীর সঙ্গে। সোনালির জ্যাঠা রতন মজুমদারও নানা ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন।

' ! ! 💃 '

'

সোনালির বয়স তখন সাড়ে ৬। বিভাসের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু। চলে পড়াশোনাও। বিভাস জানান, কয়েক বছর ধরে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তিনি থাকেন মুম্বইয়ে। ২০১২-তে ‘ইন্ডিয়া’স গট ট্যালেন্ট’ প্রতিযোগিতায় নজর কাড়ে সোনালি। বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় সোনালি মুম্বইয়ে তারকাদের সামনে নাচের সুযোগ পায়। ২০১৯-এ যোগ দেয় ‘ব্রিটেন’স গট ট্যালেন্ট’ প্রতিযোগিতায়। মার্চে পারফর্ম করে মুম্বইয়ে ফিরেছে সে। সেপ্টেম্বরে ফের আমেরিকা যাওয়ার কথা।

আলপনা জানান, গত নভেম্বরে বাড়ি এসেছিল মেয়ে। সন্ন্যাসী জানান, দু’বিঘে জমিতে কলাচাষ করেছিলেন। আমপানে নষ্ট হয়েছে। সব ভুলে যান তাঁরা, যখন মেয়ের সাফল্যের কথা ভাবেন। আর মঞ্চে সোনালি বলেছে, ‘‘বাবা-মা আমার জন্য প্রচণ্ড কষ্ট করেছেন। এখন ভাল লাগে, যখন লোকজন আমাকে দেখে চিনতে পারে। স্বীকৃতি দেয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement