farakka

চোরাপথে বাজি ঢুকেছে জেলায়, মানছে পুলিশও

পল্লবের মৃত্যুতে গ্রামেরই ১০ কিশোর ও তরুণকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে জামিনে মুক্তি পান তাঁরা।

Advertisement

বিমান হাজরা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

‘গোপন পথে’ বাজি ঢুকেছে মুর্শিদাবাদে, মেনে নিচ্ছে জেলা পুলিশ। তাদের দাবি, সেই বাজির ‘উৎসস্থল’ পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের আরও বক্তব্য, কালীপুজোর রাতে ফরাক্কায় বাজি ফাটাতে গিয়ে যে পল্লব সরকারের মৃত্যু হয়েছে, তিনিও সম্ভবত এই ভাবেই বাজি পেয়েছিলেন। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, শব্দবাজির এই ‘অনুপ্রবেশ’ পুলিশ পুরোপুরি আটকাতে পারল না কেন? একই সঙ্গে স্থানীয় মানুষদের অনেকেই জানতে চাইছেন, জেলায় যে শব্দবাজির ভান্ডার এখনও লুকনো আছে, তা খুঁজে বার করতে পুলিশ কি কিছু করছে? জেলা পুলিশের শীর্ষস্তর থেকে এই নিয়ে কিছু বলতে চাওয়া হয়নি।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, এক বাক্স নিষিদ্ধ বাজি আঁকুড়া গ্রামের বাসিন্দা পল্লবই কিনে এনেছিলেন প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের অরঙ্গাবাদ থেকে। ফরাক্কা থানার আইসি দেবব্রত চক্রবর্তী স্বীকার করেন, ‘‘প্রকাশ্যে শব্দবাজি বেচাকেনা বন্ধ করা গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু লুকিয়ে শব্দবাজি আনার প্রবণতা বন্ধ হয়নি।’’ অরঙ্গাবাদে অতীতে বাজি তৈরি করা হত। তবে পুলিশ জানিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই সেখানে আর বাজি তৈরি হচ্ছে না। তা হলে এই শব্দবাজি এল কী করে? পুলিশের দাবি, এই বাজি চোরাপথে ঝাড়খণ্ড থেকে এসেছে। ঝাড়খণ্ডে পুজোর মরসুমে শব্দবাজিতে ছাড় রয়েছে। সেখানে খোলা বাজারেই শব্দবাজি বিক্রি হচ্ছে। ফরাক্কা, সুতি এলাকার কিছু ব্যক্তি গোপনে সেই সব বাজি এনেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

পুলিশের আরও দাবি, ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে এ জেলায় অন্তত বিশটি গ্রামীণ পথে যাতায়াত চলে। সেই পথেই বাজি এসেছে বলে পুলিশের সন্দেহ। তা হলে সেই সব পথে কড়া নজরদারি নেই কেন? এ প্রসঙ্গে অবশ্য জেলা পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে মুখ খুলতে চাননি। ফোন ধরেননি, মেসেজেরও উত্তর দেননি।

Advertisement

পল্লবের মৃত্যুতে গ্রামেরই ১০ কিশোর ও তরুণকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে জামিনে মুক্তি পান তাঁরা। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁরাই জানিয়েছেন যে, পল্লব ওই বাজি কিনেছিলেন। তবে কোন দোকান থেকে বাজি আনা হয়েছিল বা কে বিক্রি করেছিলেন, তা এখনও জানা যায়নি।

ফরাক্কা থানার আইসি বলছেন, ‘‘আঁকুড়ার সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে ধৃতদের। সামনে ছটপুজো। শয়ে শয়ে মানুষ আসেন ফরাক্কায় গঙ্গার তীরে পুজোর জন্য। তাই নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।”

পল্লবের গ্রাম এ দিনও থমথমে। তাঁর বাবা রাজারাম সরকার বলেন, “তিন ছেলের বড়টিও মারা গেছে এক দুর্ঘটনায়। দ্বিতীয় পুত্রেরও মৃত্যু হল। কখন যে ছেলে বাড়িতে শব্দবাজি এনেছিল, তা-ও জানি না। নিজের বিপদ ছেলে নিজেই ডেকে এনেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement