মাকে ছোবল মেরে ঘুমন্ত শিশুর গলায় পেঁচিয়ে ধরল সাপ!

ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়ার ওই দম্পতি মোহন ও শিখা হেমব্রম এবং তাঁদের দেড় বছরের ছেলে মানিক কলেই ভর্তি ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০৩:২৮
Share:

হাসপাতালে মানিক। নিজস্ব চিত্র

দেড় বছরের ঘুমন্ত শিশুর গলায় জড়িয়ে ফণা তুলে ছিল সাপ। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে সাপের ছোবল খেলেন বাবা। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল হাসপাতালে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরে দেখা গেল, বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শিশুর মা। তাঁকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে জানা যায়, মাকে ছোবল মারার পরই সাপটি গিয়েছিল ঘুমন্ত শিশুর কাছে।

Advertisement

ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়ার ওই দম্পতি মোহন ও শিখা হেমব্রম এবং তাঁদের দেড় বছরের ছেলে মানিক কলেই ভর্তি ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। মঙ্গলবার চিকিৎসকেরা জানান, শিখাকে হাসপাতালে আনার ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা দেরি হয়েছিল। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। মায়ের স্তনপান করায় শিশুকেও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

এ দিন হাসপাতালে শুয়েই চৈনিশোল গ্রামের বাসিন্দা বছর সাতাশের মোহন জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পর দুই ছেলেকে নিয়ে শুতে গিয়েছিলেন তাঁরা। টাঙিয়েছিলেন মশারিও। হেমব্রম দম্পতির বড় ছেলে তিন বছরের সাগুন ও ছোট ছেলে মানিক শুয়েছিল বাবা-মায়ের মাঝখানে। মোহন বলেন, ‘‘মাঝরাতে স্ত্রীর চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখি স্ত্রী ভয়ে কাঁপছে। অঘোরে ঘুমোচ্ছে সাগুন ও মানিক। মানিকের গলায় পেঁচিয়ে ফণা তুলে আছে একটা সাপ।’’ ছেলেকে বাঁচাতে সাপের মাথা চেপে ধরতে যান মোহন। তখনই তাঁকে ছোবল মারে সাপ। চিৎকারে জড়ো হন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই সাপ মেরে মোহনকে নিয়ে যান হাসপাতালে।

Advertisement

ভোরের দিকে শিখার পেট ও গলা ব্যথা করতে থাকে। শিখার পরিজনেরা দুই নাতি ও বউমাকে নিয়ে হাসপাতালে যান। শিখাকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)-এ ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, ‘‘৭২ ঘণ্টা না কাটলে তিন জনের সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে।’’

প্রতিবেশী শচীন বাস্কে বলেন, ‘‘শিখাকে যে সাপে কামড়েছে সেটা ঘুণাক্ষরেও কেউ বুঝতে পারিনি।’’ সর্প বিশেষজ্ঞ তথা কেশপুর কলেজের প্রাণিবিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান সুমন প্রতিহার আক্রান্তের উপসর্গের কথা জেনে বলেন, ‘‘সম্ভবত সাপটি ‘কালাচ’ (কমন ক্রেট)। এই সাপ মূলত ঘুমন্ত মানুষকে ছোবল মারে। আক্রান্ত ব্যক্তি অনেক সময় বুঝতেই পারেন না যে তাঁকে সাপে ছোবল মেরেছে। পরে শুরু হয় পেট ব্যথা, গলা ব্যথা কিংবা সারা শরীর জুড়ে অস্বস্তি। সময়মতো চিকিৎসা শুরু না হলে অবধারিত মৃত্যু।’’

ঠাকুরমার সঙ্গে রয়েছে সাগুন। সে বুঝতে পারছে না কেন একসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি বাবা-মা আর ভাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement