নির্যাতিতার বাড়িতে সিবিআই। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সিবিআই তদন্ত নিয়ে রবিবারই প্রশ্ন তুলেছিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে খুন হওয়া তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মা। বলেছিলেন, “সিবিআইয়ের তদন্ত কয়েক দিন হয়ে গেল। কিন্তু এখনও কিছুই হয়নি, এটা নিয়ে একটু হতাশা তো আমাদের থাকবেই। কিন্তু আস্থা তো রাখতেই হবে! উপায় কী তা ছাড়া!”
সোমবার দুপুরেই দুই সিবিআই আধিকারিক পৌঁছলেন ওই চিকিৎসকের বাড়িতে। বিকেলে সেখানে যান সিবিআইয়ের ফরেন্সিক বিভাগের আরও তিন জন। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা তদন্ত চালান। সিবিআই আধিকারিক থেকে পরিবারের কেউই এ দিনের তদন্তের বিষয়ে সরাসরি মুখ খুলতে চাননি।
তবে চিকিৎসকের বাবা-মা বলেন, “সিবিআইকে আমরা পুরোটাই বলেছি। চেস্ট ডিপার্টমেন্টকেই দায়ী করেছি। আমার মেয়েকে ওর এমএসভিপি (মেডিক্যাল সুপার অ্যান্ড ভাইস প্রেসিডেন্ট) প্রচণ্ড চাপে রাখত। জ্বর হলেও ছুটি দিত না। রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তখনও ছুটি দেয়নি। মেয়ে সব সময়েই এগুলো এড়িয়ে চলত। মেয়ে বলেছিল, আমি যে ওখানে আছি এটা পরিচিত কাউকে বোলো না, কারণ কারও জন্য আমি কিছু করতে পারব না। তা হলে আমাকে ফেল করিয়ে দেবে। এই ভয়টা মেয়ের ছিল। এমডি-তে গোল্ড মেডেল পেতে হবে, এটাই ওর লক্ষ্য ছিল। এটাও একটা কারণ হতে পারে। সবই তদন্তসাপেক্ষ।”
একই সঙ্গে ওই তরুণী চিকিৎসকের ব্যক্তিগত ডায়েরি প্রসঙ্গে তাঁর মা বলেন, “ডায়েরির পাতা মাঝেমধ্যেই ছেঁড়া। তার প্রমাণ আমার কাছে আছে। ছবি আছে আমাদের কাছে। মৃত্যুর আগেই কিছু কথা লিখেছিল। জীবনের সুখ-দুঃখ নিয়ে কিছু কথা ছিল। এর বেশি কিছু বলব না। ডায়েরিতেই তথ্য ছিল অনেক। এখনও যা আছে, তদন্তের জন্য বলব না।” এ দিন সেই ডায়েরির তথ্য সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন তাঁরা।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসেছিলেন বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে, সমবেদনা জানাতে। তার পরেই টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে সরকার, এই অভিযোগে বিতর্ক তৈরি হয়। বাবা-মা এ দিন তা নিয়ে বলেন, “রাজ্যবাসী তথা দেশবাসীর কাছে আবেদন করতে চাই, যাঁরা কন্যাশ্রী প্রকল্প, লক্ষ্মীর ভান্ডার নিচ্ছেন, তাঁরা নেওয়ার আগে একবার ভাববেন তাঁদের লক্ষ্মী সুরক্ষিত কি না। তবে মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে এসে কত টাকা ক্ষতিপূরণ দেবেন সে কথা বলেননি, শুধু ক্ষতিপূরণের কথা বলেছিলেন। আমরা বলেছি, যারা দোষী তারা চরম শাস্তি পাক। তার পরে ক্ষতিপূরণ নেব। তার আগে নেব না।”