—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ঢোলাহাটে যুবকের মৃত্যু ঘিরে এমনিতেই অভিযোগের আঙুল পুলিশের দিকে। এ বার ‘জামিন পাইয়ে দেওয়ার শর্ত’ হিসেবেও পুলিশের বিরুদ্ধে পৌনে দু’লক্ষ টাকা
ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ করল মৃত যুবকের পরিবার।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে মৃতের পরিবারের আইনজীবী শামিম আহমেদ অভিযোগ করেন, আবু সিদ্দিক হালদার (২২) নামে ওই যুবককে চোর সন্দেহে থানায় ধরে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। তার পরে ঢোলাহাট থানার আইসি জামিন পাইয়ে দেওয়ার জন্য পৌনে দু’লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন। থানায় আবুকে বেদম মারধরের পাশাপাশি বিদ্যুতের শক দেওয়া হয়েছিল বলেও তাঁর অভিযোগ।
আবুর কাকার বাড়িতে চুরি হয়েছিল। সেই ঘটনায় আবুকে গ্রেফতার করে থানা। আবুর পরিবারের অভিযোগ, ৪ জুলাই জামিন পাওয়ার পরে আবুর শরীরে আঘাতের দাগ ছিল। তিনি পরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। একাধিক হাসপাতাল ঘুরে শেষে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে মারা যান।
এ দিন পুলিশের বিরুদ্ধে মৃত্যুর ঘটনা আড়াল করার অভিযোগও কোর্টে করেছেন আবুর পরিবারের আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, পুলিশ আবুর দেহের ময়নাতদন্তের কথা পরিবারকে জানায়নি। ডাক্তারের রিপোর্টও দেওয়া হয়নি। কেন এই ‘অতি সক্রিয়তা’, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। যদিও রাজ্যের দাবি, জন্ডিস এবং রক্তে ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিনের উচ্চমাত্রাই মৃত্যুর কারণ।
এ দিন বিচারপতি সিংহের নির্দেশ, মামলাকারীকে সব নথিপত্র দিতে হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টও কোর্টে জমা দিতে হবে। আবুর ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সিসি-ক্যামেরার ছবিও সংরক্ষণ করতে হবে। আজ, শুক্রবার ফের মামলার শুনানি।
এই ঘটনায় ঢোলাহাট থানার সিসি-ক্যামেরার ফুটেজ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্যের কৌঁসুলির দাবি, সিসি-ক্যামেরা খারাপ হওয়ায় ওই তথ্য পাওয়া যাবে না। এই বক্তব্য শুনে রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারপতি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পুলিশের হেফাজতে মারধর বা মৃত্যুর ঘটনায় বারবার কেন থানার সিসিটিভি-তথ্য পাওয়া যায় না?’’
রাজ্যের আইনজীবী জানান, ২৩ জুন থেকেই সিসি-ক্যামেরা খারাপ। এই ক্যামেরা খারাপ থাকার কথা কাকদ্বীপ আদালতের বিচারককেও জানানো হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে মারধরের অভিযোগও অস্বীকার করেছে রাজ্য। সরকারি কৌঁসুলির দাবি, আবুকে ৪ জুলাই ভোর ৪টে নাগাদ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সে দিনই বেলার দিকে তিনি কোর্ট থেকে জামিন পান। তাই পুলিশ হেফাজতে মারধরের সম্ভাবনা নেই।