ছেলের জন্য প্রার্থনা মায়ের। চন্দ্রযান নামার আগের দিন। —নিজস্ব চিত্র।
আর কয়েক ঘণ্টা। আজ, বুধবার চাঁদের মাটি ছোঁয়ার কথা চন্দ্রযান ৩-এর। দেশবাসীর সঙ্গে সেই মুহূর্তের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন এক মা। এক পরিবার। এক শহর। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর। স্থানীয় ভূমিপুত্র অনুজ নন্দী জড়িয়ে রয়েছেন ইসরোর এই চন্দ্রাভিযানের সঙ্গে।
পরিবারের সদস্যদের বেশির ভাগেরই এলাকায় ওষুধের ব্যবসা। ইসলামপুর হাইস্কুলের ছাত্র বছর ৪৯-এর অনুজ দীর্ঘদিন বেঙ্গালুরুতে কর্মরত। এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, ছোট থেকেই মেধাবী বলে তিনি পরিচিত। ইসলামপুর শহরে ছোটবেলা কেটেছে তাঁর। রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর পাশ। পরে, এমটেক ও পিএইচ ডি-ও করেছেন।
ইসরো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চন্দ্রযান ৩-এর ‘ল্যান্ডার’কে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে যে ‘প্রোপালশন মডিউল পে-লোড’, তার গায়ে ‘স্পেকট্রো-পোলামেট্রি অব হ্যাবিটেবল প্ল্যানেট আর্থ’ (সংক্ষেপে ‘শেপ’) নামে যন্ত্র নির্মাণের দায়িত্ব ছিলেন অনুজ। অনুজের কাকা হরেকৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘‘পেশায় সাফল্য পেলেও, পরিবারকে ভোলেনি। ভাইপো সফল হবেই।’’ খুড়তুতো ভাই প্রসেনজিৎ নন্দী বলেন, ‘‘দাদা এতটাই ব্যস্ত থাকে, রাত সাড়ে ১১টা-১২টার আগে কথা বলতে পারি না। বুধবার দিনটা স্পেশাল।’’ ইসলামপুর হাইস্কুলের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক উত্তম পণ্ডিত রায়গঞ্জে পড়ার সময় অনুজ নন্দীর সঙ্গে একই মেসে থাকতেন। তাঁর স্মৃতিচারণ, ‘‘ওঁর সাফল্য চাঁদের সঙ্গে জুড়ে দেবে ইসলামপুরের নাম।’’ বুধবার দিনটা চন্দ্রযানের জন্য ঠিকঠাক কাটুক, অপেক্ষায় রয়েছে ইসলামপুর হাই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র স্বরূপ রায়। তার উচ্ছ্বাস, ‘‘আমাদের স্কুলের প্রাক্তনী আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।’’ ছেলের পরিশ্রম যাতে সফল হয়, চন্দ্রযান উৎক্ষেপণের পর থেকেই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানাচ্ছেন অনুজের মা শোভারানি নন্দী। তিনি বলেন, ‘‘দিনরাত ঠাকুরকে ডাকছি। ওর পরিশ্রম যেন সফল হয়।’’