গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কসবার ভুয়ো টিকাকরণ-কাণ্ড নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক’ না থাকলে এ ধরনের কেলেঙ্কারি ঘটানো যায় না। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও তুলেছেন বাবুল। ভুয়ো টিকাকরণের শিবির নিয়ে বাবুলের মতোই সরব হয়েছেন দলের বিজেপি-র সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে কত টিকা এসেছে ও সেগুলি কোন কোন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে, তার হিসাব জানতে চেয়ে সরকারের কাছে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তুলেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, কসবায় ১০ দিন ধরে ভুয়ো টিকাকরণ শিবির চালানোর অভিযোগে ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শান্তনু মান্না নামে তার এক সহযোগীও পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। সেই কাণ্ড প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি নেতারা সরব হয়েছেন।
দেবাঞ্জনের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রধান প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের। তালতলায় রবীন্দ্র-মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের যুগ্মসচিব পরিচয়ে দেবাঞ্জনের উপস্থিতির অভিযোগ করেছে বিজেপি। যদিও শুক্রবার কলকাতা পুরসভার তরফে ওই অভিযোগ খারিজ করা হয়েছে। নেটমাধ্যমে তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল। শুক্রবার টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘তৃণমূলের বড় বড় মাথাদের সঙ্গে দহরম মহরম না থাকলে যে এত বড় কেলেঙ্কারি ঘটানো যায় না, তা আবার বলতে হবে।’ নিজের টুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক-সহ তৃণমূল এবং তাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ট্যাগ করে বাবুলের দাবি, ‘কোনও রকম বৈষম্য ছাড়াই গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত।’
ভুয়ো টিকা-কাণ্ডে বাবুলের সুরেই রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন হুগলির সাংসদ লকেট। শুক্রবার চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে কালাদিবস পালনের অবস্থান-ধর্নায় যোগ দিয়ে লকেট বলেন, “হাজার হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তাদের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা হচ্ছে। টিকাকরণের পর তাদের যদি কিছু হয়, তার দায়িত্ব কি রাজ্য সরকার নেবে?” তাঁর দাবি, “আমরা আরটিআই করে জানব, সরকার কত ভ্যাকসিন পেয়েছে? কোন সেন্টারে কত ভ্যাকসিন গিয়েছে এবং কত রয়েছে? ওই বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক রাজ্য সরকার।” লকেটের আরও দাবি, “ভ্যাকসিনের এত বড় কেলেঙ্কারির পিছনে কার মাথা রয়েছে, তা খুঁজে বার করা প্রয়োজন। ভ্যাকসিন নিয়ে দুর্নীতি চলছে। ভ্যাকসিনের বদলে বিষ বা অন্য কিছু ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে কি না, তা-ও তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্তে হয়তো দেখা যাবে যে, এই দেবাঞ্জন দেব বলির পাঁঠা হবে। আরও একটা সুদীপ্ত সেন হবে। টিকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রের কমিটি তৈরি করে এর তদন্ত করতে হবে।”