বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পেতে তফসিলি জাতি বা জনজাতির ভুয়ো বা জাল শংসাপত্র দাখিলের অভিযোগ ওঠে হামেশাই। ভুয়ো প্রমাণপত্র দাখিল করে অনেক ইমাম ও মোয়াজ্জেন ভাতা তুলছেন এবং অনেকে ইমাম বা মোয়াজ্জেন ওই ভাতা পেতে ভুয়ো প্রমাণপত্র দাখিল করছেন বলেও অভিযোগ আসছে ভূরি ভূরি।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের ম্যাডান স্ট্রিটের কার্যালয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দিয়েছেন বোর্ডের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার। তাতে বলা হয়েছে, যাঁরা ইমাম বা মোয়াজ্জেন ভাতা গ্রহণ করছেন অথবা ওই সব ভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন, তাঁদের ওয়াকফ বোর্ডের কার্যালয়ে আসতে হবে। ভাতা পাওয়ার জন্য যে-যোগ্যতা প্রয়োজন, সেগুলো যে তাঁদের আছে, তার তথ্যপ্রমাণ জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে এটাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, এই নির্দেশ না-মানলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে বোর্ডের কার্যালয়ে। ইতিমধ্যেই অনেক ইমাম-মোয়াজ্জেনের নাম ভাতা প্রাপকদের তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে বলে জানান রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারক আব্দুল গনি। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে, এমন অনেকেই ভাতা নিচ্ছেন বা ভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন, যাঁদের ভাতা পাওয়ার যোগ্যতা নেই। অভিযোগ পেয়েই আমরা সেই সব ব্যক্তির আবেদনপত্র খুঁটিয়ে দেখি। অনেকেরই আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। ভাতা-তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে অনেককেই। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা কয়েকশো হবে।’’
রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের মাধ্যমে ইমামদের মাসে আড়াই হাজার এবং মোয়াজ্জেনদের মাসে দেড় হাজার টাকা ভাতা দেয় রাজ্য সরকার। বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, শর্ত অনুযায়ী সেই সব মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জেনরাই ভাতা পেতে পারেন, যেগুলি ২০১১ সালের আগে নির্মিত এবং যেখানে দিনে পাঁচ বার নমাজ পড়া হয়। যিনি ভাতার জন্য আবেদন করবেন, তাঁর ন্যূনতম তিন বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, এমন অনেকেই আবেদন করেছেন, যাঁদের তিন বছরের কাজের অভিজ্ঞতা নেই। আবার এমন অনেক মসজিদের ইমাম বা মোয়াজ্জেন ভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন, যেগুলি ২০১২ অথবা তার পরে তৈরি হয়েছে। ‘‘এই বিষয়ে কয়েকটি লিখিত অভিযোগও এসেছিল। বাকি অভিযোগগুলি ছিল মৌখিক। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ এসেছিল মোয়াজ্জেনের বিরুদ্ধে,’’ বলেন চেয়ারম্যান।