মিতার পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ভরসাতেই ফের নবান্নের দ্বারস্থ আরও এক কন্যাহারা পরিবার।
মেয়েকে বিষ খাইয়ে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই শ্বশুরবাড়ির ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তির পরিবারটি। স্বামী-শ্বশুর ধরা পড়লেও বাকিরা পলাতক। সবার শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হল মানসীর পরিবার।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম মানসী মিস্ত্রি (২৫)। দেড় বছর আগে উস্তির কয়ালপাড়ার মানসীর সঙ্গে বিয়ে হয় ডায়মন্ড হারবারের সরিষার নীলকান্ত মিস্ত্রির। বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের দাবিতে ওই তরুণীর উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন, অভিযোগ মানসীর বাপের বাড়ির। কিছু দিন আগে মানসী বাপের বাড়ি এসে ১০ লক্ষ টাকা চান। বাবা জ্ঞানদা কয়াল বলেন, ‘‘মেয়ে বলেছিল, দেওরের চাকরির জন্য টাকাটা দরকার। না পেলে ওকে মারধর করা হতে পারে।’’ কিন্তু দিনমজুর বাবা সব বুঝেও মেয়ের কথা রাখতে পারেননি। খালি হাতেই ফিরতে হয়েছিল মানসীকে।তাঁর অভিযোগ, ২৮ সেপ্টেম্বর মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে পুজোর কাপড় দিতে গিয়ে দেখেন মেয়ে অসুস্থ। এর পরেই মানসীর গলায় সংক্রমণ হয়েছে বলে তাঁকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পর দিন তাঁকে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই থাকে।
ভগ্নীপতি অজয় জানার দাবি, এসএসকেএমের বেডে শুয়ে অসুস্থ মানসী জানান, টাকার দাবি না মেটায় স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, দেওর তাঁকে চেপে ধরে গলায় বিষ ঢেলে দেয়। মারধরও করে। কথা পাঁচকান হলে খুনের হুমকি দেয়। মানসীর সে বয়ান তিনি রেকর্ড করে রেখেছেন বলে জানান অজয়বাবু।
নবান্নে মানসীর পরিবার জানান, বিষ খাওয়ানোর কথা জানতে পেরে জামাইকে ফোন করেন তাঁরা। তখন নীলকান্ত দাবি করে, মানসী নিজেই বিষ খেয়েছিল। তা হলে বিনা চিকিৎসায় মেয়েকে কেন ৩টে দিন ফেলে রাখা হল, সে প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা। ১৪ অক্টোবরে সেখানেই মারা যান ওই তরুণী। এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রের খবর, বিষক্রিয়ার ফলেই ওই বধূর মৃত্যু হয়েছে।এর পরেই ডায়মন্ড হারবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয় নীলকান্ত-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে। নীলকান্ত ও শ্বশুর বৈদ্যনাথ ধরাও পড়ে। মা অর্চনা মিস্ত্রি, দেওর ময়ূর মিস্ত্রি, ননদ উমা হালদার, নন্দাই সোমনাথ হালদার পলাতক। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে, বলেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের এক কর্তা।