বিপত্তি: আলাদা হয়ে গিয়েছে উলুবেড়িয়া লোকালের কামরা। বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার আবাদা স্টেশনে। ছবি: সুব্রত জানা
আমার মেয়ে সারজানা রহমান উলুবেড়িয়ায় একটি বেসরকারি স্কুলে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তাকে নিতেই আমার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থেকে উলুবেড়িয়া যাওয়া। মেয়েকে নিয়েই উলুবেড়িয়া থেকে হাওড়ায় ফিরছিলাম। ওই ট্রেনের মাঝামাঝি একটি কামরায় ছিলাম আমরা। ভিড় ছিল যথেষ্টই। সেই কোচ-সহ আরও ৪টি কোচ আচমকা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মূল ট্রেন থেকে।
উলুবেড়িয়া থেকে ট্রেনটি ছাড়ে সকাল ৮টা ২৪ মিনিট নাগাদ। আর দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ঠিক ৮টা ৫২ মিনিটে। ট্রেনটি যে ভাবে চলে, সে ভাবেই চলছিল। আবাদা স্টেশনে দাঁড়ায়। স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়তেই হঠাৎই একটা বিকট শব্দ। সবাই ভয় পেয়ে যান।
ট্রেন যে হেতু সবে চলতে শুরু করেছিল, তাই তেমন গতি ছিল না। শব্দ শুনেই কিছু একটা বিপদ ঘটেছে বুঝে ট্রেন থেকে নামতে শুরু করি সকলেই। ভেবেছিলাম, ট্রেন লাইন থেকে পড়ে গিয়েছে। লাফিয়ে প্ল্যাটফর্মে নামতেই দেখি, আমাদের কামরা-সহ পিছনের আরও চারটি কামরা মূল ট্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ইঞ্জিন কামরা-সহ ট্রেনটি কিছুটা এগিয়ে গিয়েছে। কাপলিং জয়েন্ট খুলে বা কেটে গিয়েই এই বিপত্তি।
ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়তে ছুটে আসেন রেলকর্মীরা। তবে কারও কোনও বিপদ ঘটেনি। কিন্তু যদি গতি বেশি থাকত, আর সেই অবস্থায় এ ভাবে ট্রেনের কাপলিং খুলে যেত, তবে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
এই ঘটনার পরে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে দু’ভাগে ভাগ হয়ে। বেলা ১০টা ১০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করি। পরের ট্রেন আসতেই আমরা তাতে চড়ে হাওড়ায় পৌঁছই। হাওড়া থেকে ১৩৪৬৫ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ধরে মুর্শিদাবাদে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিই।
ভাগ্য ভাল, দুর্ঘটনাটি এমন বড় কিছু নয় হয়তো। কিন্তু ট্রেনটির গতি বেশি থাকলে কী বিপদ ঘটত, ভাবতেই শিউরে উঠছি।
(দুর্ঘটনাগ্রস্ত উলুবেড়িয়া লোকালের যাত্রী)