যোগদান: তৃণমূলে পরিমল। পাশে গৌতম দেব। নিজস্ব চিত্র
সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত কাউন্সিলর পরিমল মিত্র রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিলেন তৃণমূলে। প্রায় ৪৫ বছর ধরে সিপিএমের সক্রিয় সদস্য পরিমল বাম পরিচালিত বর্তমান পুরবোর্ডের মেয়র পারিষদও ছিলেন। ক’দিন আগেই দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করে সিপিএম।
এ দিন শিলিগুড়ি পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম দেবের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নেন পরিমল। পরে বাম পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে একাধিক বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।
এ দিন নিজের পুরনো দল সিপিএমের ছাত্র, যুব এবং মহিলা শাখার ১২ জনকে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন পরিমল। অনুষ্ঠান মঞ্চে উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির নেতা গৌতম দেব বলেন, ‘‘পরিমলবাবুর সঙ্গে আমি ছাত্র রাজনীতিতে একসঙ্গে ছিলাম। দীর্ঘ দিন পরে আবার একসঙ্গে কাজ করব। সিপিএমে তিনি আর থাকতে পারছিলেন না। তাঁর বস্তি এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগবে। যিনি পদত্যাগ করে দিয়েছেন, তাঁকে আবার নতুন করে সিপিএম দল থেকে কী ভাবে বের করবে?’’
এ দিন পরিমল জানান, পুরবোর্ডের ভিতরে নানা দুর্নীতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের গোলমাল শুরু হয়। তাঁর অভিযোগ, পুরসভায় বিভিন্ন পদে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে বোর্ডের নেতারা ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিতেন। পরে তা মেয়র পারিষদের বৈঠকে পাশ করিয়ে নেওয়া হত। তা নিয়ে প্রতিবাদ করার পরে তাঁকে গুরুত্বহীন করে দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। পরিমল বলেন, ‘‘গত ডিসেম্বরে পদত্যাগপত্র জমা দেই। দু’মাস অপেক্ষার পরে পদত্যাগ গৃহীত হয়েছে কিনা জানতে চাই। কেউ কোনও জবাব দেননি।’’ গত সপ্তাহে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি করেছিলেন সিপিএম নেতারা। যদিও পরিমলের দাবি, তিনি আগেই পদত্যাগ করেছেন।
পুরসভার বিরুদ্ধে পরিমলের তোলা দুর্নীতির অভিযোগগুলি নিয়ে মেয়র তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পরিমলবাবুর অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। এখন দেখছি, তাঁকে অনেক আগেই দল থেকে বের করে দেওয়া উচিত ছিল।’’
এ দিকে পরিমল দলে যোগ দেওয়ার পরে রবিবারই ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এক তৃণমূল নেতা পদত্যাগ করেছেন। বিবেক সিংহ নামে ওই নেতা তাঁর পদত্যাগের কারণ হিসেবে ব্যক্তিগত অসুবিধার দাবি করলেও তৃণমূলের অন্দরের খবর, পরিমলের যোগদানের জন্যই তিনি পদত্যাগ করেছেন। মাত্র দু’মাস হল বিবেক কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। যদিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূল নেতারা। এ দিন অনুষ্ঠানে প্রশ্ন করা হলে বিবেক সিংহের পদত্যাগ নিয়ে কিছু বলতে চাননি গৌতম এবং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকাররা। পরিমলের নিজের দাবি, কোনও গোষ্ঠীকোন্দলের ব্যাপার নেই। ওয়ার্ড সভাপতি সোমা দাস তাঁর সঙ্গেই রয়েছেন।