প্রতীকী ছবি।
লক্ষ্য রাজস্ব আদায়। তাই মদ বিক্রিতেও ‘হয় ভাতা, নয় জরিমানা’ নীতি নিচ্ছে আবগারি দফতর।
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বড় বোতল এবং প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের মদের উপর বেশি কর বসিয়ে ছোট বোতল এবং চলতি ব্র্যান্ডে কম কর আদায় করতে চায় সরকার। সেই সঙ্গে দিশি বা বিলিতি মদের খুচরো বিক্রেতাদের এখন থেকে বছরে নিদেনপক্ষে কত পরিমাণ মদ বিক্রি করতে হবে, তার টার্গেটও দিয়ে দেবে সরকার। যা পূরণ করলে খুচরো বিক্রেতারা উৎসাহ ভাতা পাবেন, না হলে তাদের জরিমানা দিতে হবে। সেই টার্গেট শুধু দোকান মালিকদেরই থাকবে না, প্রতি জেলার আবগারি অফিসারদেরও মদ বিক্রির টার্গেট দিয়ে দেওয়া হবে। আগামী বছর থেকে বার্ষিক অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব বাবদ তুলতে চায় সরকার। এখন আবগারি খাতে মদ বিক্রি করে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা আদায় হয়।
আবগারি কর্তারা জানাচ্ছেন, দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে খুচরো দোকানদের মদ বিক্রির বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে দেওয়া হয়। তিন বছরের বিক্রির গড় বা শেষ বছরের বিক্রির পরিমাণটিই কোনও খুচরো বিক্রেতার বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে গণ্য হবে। অর্থাৎ দিশি বা বিলিতি মদ বিক্রেতারা আগের বছরের বিক্রির চেয়ে কম মদ পরের বছর বিক্রি করতে পারবেন না। তাঁদের আগের বছরে যা বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ মদ বিক্রি করতে হবে। যদি বেশি বিক্রি করতে পারেন, তা হলে আবগারি দফতর দোকানদারদের উৎসাহ ভাতা দেবে। আর না পারলে প্রথম বছরে জরিমানা করা হতে পারে। পর পর কয়েক বছর মদের বিক্রি কমে গেলে সংশ্লিষ্ট দোকানদারের লাইসেন্স বাতিল করে দেবে সরকার। সেই স্থানে নতুন কাউকে লাইসেন্স দেওয়া হবে। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘আবগারি লাইসেন্স প্রাপকের অধিকার নয়। সরকার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত এই ব্যবস্থায় যে কোনও সময় লাইসেন্স কেড়ে নিতে পারে। ফলে মদ বিক্রির সঙ্গে এই শর্ত জুড়ে দেওয়া হবে। বাড়তি মদ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা দিলেই চোলাই বা নকল মদের কারবারও কমতে শুরু করবে। প্রতিযোগিতায় পড়ে সরকারি লাইসেন্স প্রাপকেরা আইনি মদ বিক্রি করতে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য হবেন।’’
আবগারি কর্তারা জানাচ্ছেন, আবগারি দফতরের জেলাভিত্তিক মদ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রাও ঠিক হবে। জেলার আবগারি সুপাররা দোকানদারদের মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা ভাগ করে দেবেন। কর্পোরেট কায়দায় বছরের শুরুতে কোন জেলায় কত পরিমাণ মদ বিক্রি করা হবে, কত আয় হবে, তার পরিকল্পনা করে নেওয়া হবে।