Culture

হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন সংস্কৃতির সন্ধানে ফের খনন শুরু করবে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ

এখানে প্রাচীন যুগের সঙ্গে সঙ্গে লৌহ যুগের নিদর্শন যেমন মিলেছে, তেমনই মিলেছে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয়-প্রথম সহস্রাব্দের মৃৎপাত্র এবং পরে গুপ্ত যুগের নিদর্শনও।

Advertisement

অলখ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩৮
Share:

ভরতপুর থেকে প্রাপ্ত প্রত্ন নিদর্শন। নিজস্ব চিত্র

প্রায় পঞ্চাশ বছর আগের কথা। পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের কাছে ভরতপুর গ্রাম থেকে উদ্ধার হয় একটি প্রাচীন বৌদ্ধ স্তূপ। যার গায়ে ভূমিস্পর্শ মুদ্রায় উপবিষ্ট বুদ্ধ মূর্তি পাওয়া যায় বেশ কয়েকটি। মনে করা হয়, সেগুলি নবম-দশক শতকের। ১৯৭১-৭২ সালে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে সেই খননকার্যের পরে সর্বেক্ষণ এ বার আবার সেখানে উৎখননের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সর্বেক্ষণের কলকাতা মণ্ডলের প্রধান শুভ মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, স্তূপটিকে কেন্দ্র করে কোনও বিহার গড়ে উঠেছিল কি না, সেটা দেখা এবং এই প্রত্নস্থলের পুরা-ইতিহাস পুনঃস্থাপন।’’

Advertisement

যদি সত্যিই দামোদরের কাছাকাছি ভরতপুরে একটি বিহারের সন্ধান মেলে, তা হলে বাংলার সংস্কৃতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ঘটবে। স্তূপটির ভিত চৌকো। দু’ধরনের ইট তাতে ব্যবহার করা হয়েছে। ৫০ সেন্টিমিটার করে চওড়া দু’টি উনুন পাওয়া গিয়েছে। যা দু’টো আলাদা সময়ে ব্যবহার করা হত বলে অনুমান। তবে অল্প জায়গায় খননের ফলে সেখানে বিভিন্ন সময়ে তৈরি হয়ে ওঠা আবাস পরিকল্পনার আঁচ সে ভাবে মেলেনি। তার খোঁজও সর্বেক্ষণ করবে।

তবে, এই অঞ্চলের ইতিহাস বেশ পুরনো বলেই পুরাতত্ত্ববিদদের ধারণা। ১৯৭৩-৭৪ সালে আবার উৎখননের পরে পুরাতত্ত্ববিদদের কাছে মোটামুটি পরিষ্কার হয়, এই অঞ্চলে এখন থেকে দু’হাজার বছর আগের সময় মানুষ বসবাস করতেন। পাণ্ডুরাজার ঢিবি, ডিহর, পোখন্নায় প্রাপ্ত প্রত্নবস্তুর সঙ্গে ভরতপুরের নিম্ন স্তর থেকে প্রাপ্ত নিদর্শনের মিল রয়েছে। শুভ বলেন, ‘‘সেগুলো কতটা ঠিক, তা মিলিয়ে দেখা ও নিদর্শনগুলির বিজ্ঞানসম্মত সময়কাল নির্ধারণেরও চেষ্টাকরব আমরা।’’

Advertisement

এখানে প্রাচীন যুগের সঙ্গে সঙ্গে লৌহ যুগের নিদর্শন যেমন মিলেছে, তেমনই মিলেছে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয়-প্রথম সহস্রাব্দের মৃৎপাত্র এবং পরে গুপ্ত যুগের নিদর্শনও। তার পরে, প্রত্নস্থলটির এখনও পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া চারটি স্তরের শেষ স্তরে এখন থেকে হাজার বছরের পুরনো পঞ্চরথ স্থাপত্যের ওই স্তূপটির সন্ধান মেলে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক রজত সান্যাল বলেন, ‘‘এই প্রত্নস্থল ও এর আশপাশে দীর্ঘ সময় ধরে মানব বসতির নিদর্শন রয়েছে। তাদের পারস্পরিক সম্পর্কও কোনও নতুন সূত্রে বাঁধা পড়তে পারে সর্বক্ষণের এই প্রয়াসে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement