প্রতীকী ছবি।
ইভিএম বা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের কাজকর্মে ঘোরতর সন্দেহ প্রকাশ করে ব্যালট পেপারে পুরভোট করার পক্ষে সওয়াল করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ব্যালটে ফেরার দাবি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও দল এখনও রাজ্য নির্বাচনের কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। কিন্তু ব্যালট পেপারে ভোট হলে আমলাদের চাপ বাড়বে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের একাংশে।
সম্ভাব্য চাপের বিষয়টি ভাবাচ্ছে, কেননা শতাধিক পুরসভায় নির্বাচন করার কথা কিছু দিনের মধ্যেই। মেয়াদ ফুরোলেও রাজ্যের ১৭টি পুরসভায় এখনও ভোট হয়নি। আগামী বছরের মাঝামাঝি মেয়াদ শেষ হবে কলকাতা-সহ আরও ৯১টি পুরসভার। ওই বছরের শেষ লগ্নে মেয়াদ ফুরোবে বিধাননগর এবং আসানসোল পুর বোর্ডেরও। লোকসভা ভোটে বেশ কয়েকটি আসন হারানোর পরে তৃণমূল নেত্রী মমতা চান, আর ইভিএম নয়, ওই সব পুরসভার নির্বাচন হোক ব্যালট পেপারে।
শুধু মমতা নয়, ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তবে বিরোধীদের বক্তব্য, ভোট ইভিএম না ব্যালটে, তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ সুনিশ্চিত করা। অনেক প্রশাসনিক কর্তার মতে, ব্যালট পেপারে ভোট হলে চাপ আরও বাড়ার সম্ভাবনা। পঞ্চায়েত ভোটে গণনা কেন্দ্রে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে ইচ্ছামতো ছাপ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তা রুখতে না-পারার দায় বর্তায় প্রশাসনিক কর্তাদের উপরেই। ব্যালটে পুরভোট হলে তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে মনে করেন কিছু কর্তা। তবে প্রশাসনিক কর্তাদেরই একটি অংশের মতে, এই আশঙ্কা অমূলক। গণনা কেন্দ্র ঢুকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে ছাপ মারার ঘটনা বিচ্ছিন্ন।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের একাংশ জানায়, পুরভোট ব্যালটে হবে না ইভিএমে, সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কমিশন আগামী বছরের পুরভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, কোন সময় কোন পুর বোর্ডের মেয়াদ ফুরোবে। তার তালিকাও তৈরি হচ্ছে। পুরসভার নির্বাচন নিয়ে একটি ‘ম্যানুয়াল’ বা নির্দেশিকাও তৈরি করছে কমিশন। তাতে ভোট সংক্রান্ত আইনকানুন, ভোটকর্মীদের দায়িত্ব ইত্যাদি বলা থাকবে। ওই ম্যানুয়ালকে সঙ্গী করে রাজ্যে পুরভোট করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনের সময় জাতীয় নির্বাচন কমিশন এই ধরনের ম্যানুয়াল তৈরি করে থাকে। এখন পুর নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হলেও পুজোর পরে তা আরও গতি পাবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ। তবে ভোট সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক সবুজ সঙ্কেত আসার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।