(বাঁ দিকে) আনিসুর রহমান এবং তাঁর ভাই আলিফ নুর(ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
মাঝে একটা দিন পার। দেগঙ্গার কাউকেপাড়ার থমথমে ভাবটা কাটেনি শনিবারেও। আনিসুর রহমানকে নিয়ে তাঁর দলের ভাবনাও স্পষ্ট হয়নি।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় ধৃত কাউকেপাড়ার বাসিন্দা, দেগঙ্গা ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনিসুর রহমানের বাড়ির সামনে এ দিন সকাল থেকেই কার্যত পাহারা দিয়েছেন তাঁর অনুগামীরা। বাইরের কাউকে তাঁরা ওই বাড়ির সামনে ঘেঁষতেই দেননি। বাড়ির লোকজনেরও দেখা মেলেনি। শুক্রবার থেকে বন্ধ আনিসুরের দাদা আলিফ নুর রহমান ওরফে মুকুলের বেড়াচাঁপার চালকলও। একই মামলায় তাঁকেও গ্রেফার করেছে ইডি।
দলের ব্লক সভাপতি গ্রেফতার হওয়ায় এ বার ওই এলাকায় সংগঠনের হাল কে ধরবেন, তা নিয়ে বিভ্রান্ত সাধারণ তৃণমূল কর্মীরা। এ সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেননি তৃণমূলের বারাসত জেলা সাংগঠনিক নেতৃত্ব। আনিসুর স্বপদেই বহাল রয়েছেন। জেলা তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, কয়েক দিন পরে জেলায় দলের সাংগঠনিক স্তরে রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যা হওয়ার তখনই হতে পারে। দলের বারাসত সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।’’
বিরোধীদের পাশাপাশি তৃণমূলেরও একাংশের দাবি, আনিসুর দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ‘আস্থাভাজন’ হওয়ায় তাঁকে নিয়ে জেলা নেতৃত্বের কেউ কোনও মন্তব্য করতে সাহস করছেন না। স্থানীয়দের দাবি, গত বছর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নবজোয়ার যাত্রা’ দেগঙ্গায় পৌঁছলে, টাকি রোডে ফুল বিছিয়ে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন বিদেশ। আবার চলতি বছর চাকলার কর্মিসভায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
বিজেপির রাজ্য নেতা তাপস মিত্র বলেন, ‘‘আনিসুরদের সঙ্গে কালীঘাট জড়িত। সে কারণেই কেউ কিছু বলছেন না।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আহমেদ আলি খান বলেন, ‘‘রেশনের চাল ওরা (আনিসুররা) বাংলাদেশে পাচার করত। শতাধিক দুষ্কৃতী পুষে রেখেছে। ফলে, এলাকায় কেউই ওদের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পান না।’’
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘দুর্নীতির তদন্ত হোক। কিন্তু অভিযোগের নামে কিছু কথা যেন ছড়িয়ে দেওয়া না হয়। এ রাজ্যে গণবণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত মানুষকে এই পরিষেবা দিয়েছেন যা গোটা দেশে ব্যতিক্রম।’’