—ফাইল চিত্র।
করোনা-কালে ঘরে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা। তবে মূল্যায়নের জন্য সেই উত্তরপত্র ঘরে নিয়ে যেতে হচ্ছে না শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। নির্দিষ্ট পোর্টালে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের চূড়ান্ত বর্ষ ও চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষার জমা পড়া খাতা তাঁরা যাতে সেই পোর্টালেই দেখে নিতে পারেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বেশ কয়েকটি কলেজ তার ব্যবস্থা করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী পড়ুয়ারা বাড়িতে বসে পরীক্ষা দিয়ে উত্তরপত্র ই-মেল বা হোয়াটসঅ্যাপে কলেজে খাতা পাঠাচ্ছেন। যাঁরা তা পারছেন না, তাঁরা খাতা জমা দিচ্ছেন কলেজে গিয়ে। গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ, নিউ আলিপুর, বেহালা কলেজের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার বাইরের উলুবেড়িয়া বা বঙ্কিম সর্দার কলেজও পরীক্ষা-পোর্টালের ব্যবস্থা করেছে। নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী মঙ্গলবার জানান, প্রথম দু’দিন পোর্টালে খাতা আপলোড করতে অসুবিধা হলেও পরে সমস্যা মিটেছে। পোর্টালেই খাতা দেখছেন শিক্ষকেরা। সেই বিষয়ে তালিম দেওয়া হয়েছে তাঁদের। খাতা ডাউনলোড করে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ঝক্কি নেই এই ব্যবস্থায়। বাঁচছে সময়ও। দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজের অধ্যক্ষ সোমনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, প্রথম দিন অন্তত ১৫০ জন পরীক্ষার্থী খাতা আপলোড করতে পারেননি। তাঁরা কলেজে খাতা জমা দিয়েছেন। এখন সংখ্যাটা চল্লিশে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা পোর্টালে খাতা দেখার কাজও শুরু করে দিয়েছেন।
কলকাতায় পোর্টালে খাতা আপলোড করা এবং পোর্টালে খাতা দেখা সম্ভব। কারণ, এখানে ইন্টারনেট পরিষেবার সমস্যা কম। তবে খাতা আপলোড এবং তা দেখার কাজ চলছে ক্যানিংয়ের বঙ্কিম সর্দার কলেজেও। অধ্যক্ষ তিলক চট্টোপাধ্যায় জানান, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেকে পড়েন তাঁর কলেজে। বার বার শিখিয়ে দেওয়ায় তাঁরা তেমন ভুলত্রুটি আর করছেন না। সমস্যা যেটুকু হচ্ছে, তা একই সময়ে অনেক খাতা আপলোডিংয়ের জন্য। খাতা জমা দেওয়ার জন্য ধার্য হয়েছে মাত্র আধ ঘণ্টা। ‘‘তবে উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ চলছে মসৃণ ভাবে। পরীক্ষিত বিষয়ের ৭০% খাতা ইতিমধ্যে দেখে ফেলেছেন শিক্ষকেরা,’’ বলেন তিলকবাবু। তিনি জানান, এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিলে সময় অনেকটা বাঁচে। সামনেই আরও বেশ কয়েকটি সিমেস্টারের পরীক্ষা রয়েছে।
সেই সব পরীক্ষা একই ভাবে নেওয়া যায় কি না, বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখতে পারেন। উলুবেড়িয়া কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস পাল জানান, তাঁদের ৩০% পরীক্ষার্থীই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসেন। ৯০% পরীক্ষার্থী পোর্টালে খাতা আপলোড করতে পারছেন। যাঁরা পারছেন না, তাঁদের হয় তাঁদের স্মার্টফোন নেই বা নেই দ্রুত গতির ইন্টারনেট। তবে পোর্টাল খুব ভাল কাজ করছে। পোর্টালে খাতা দেখাও চলছে দ্রুত।
‘‘এটা খুবই ভাল প্রচেষ্টা,’’ বলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষা শিবিরের একাংশের মতে, এর পরেও যদি এই পদ্ধতিতে খাতা দেখার বন্দোবস্ত করা যায়, সময়ের অনেক সাশ্রয় হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ভাবে এমন ব্যবস্থা করতে পারলে সেটা হবে আরও ভাল।