নাসিমুদ্দিন জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দার উপমহাদেশীয় শাখার সদস্য। প্রতীকী ছবি।
বাড়ি তার মুর্শিদাবাদের শেরপুরে। প্রায় দশ মাস পালিয়ে থাকার পরে মঙ্গলবার ভোরে আল-কায়দার সন্দেহভাজন জঙ্গি নাসিমুদ্দিন শেখ (৩১)-কে গ্রেফতার করা হল হুগলির দাদপুরে। এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল আল-কায়দার শীর্ষ পদে থাকা নাসিম। রাজ্য পুলিশের এসটিএফ বা স্পেশাল টাস্ক ফোর্স সেখান থেকেই তাকে পাকড়াও করে। আজ, বুধবার তাকে বারাসত আদালতে তোলা হবে।
গোয়েন্দাদের দাবি, নাসিমুদ্দিন জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দার উপমহাদেশীয় শাখার সদস্য। জেরার মুখে নাসিম কবুল করেছে, ওই সংগঠনের শীর্ষ পদে ছিল সে। তার কাজ ছিল বাংলাদেশ থেকে বিনা বাধায় ওই সংগঠনের সদস্যদেরএ দেশে ঢোকানোর সব রকম ব্যবস্থা করা। এক গোয়েন্দাকর্তা জানান, জাল নথি ব্যবহার করে তাদের এ দেশে ঢুকিয়ে পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্যান্য রাজ্যে তাদের থাকার এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানোর ব্যবস্থা করত নাসিম। এ ভাবে ঠিক কত জঙ্গিকে সে এ দেশে নিয়ে এসেছিল, বার বার জেরা করে তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
এসটিএফ সূত্রের খবর, জঙ্গি ও জেহাদি মনোভাবাপন্ন যুবকদের মগজ ধোলাই করে তাদের দিয়ে কী ভাবে এ রাজ্যে সংগঠনের প্রচার চালানো যায়, তার পরিকল্পনা করত নাসিমুদ্দিন। গত অগস্টে গোয়েন্দারা বারাসতের শাসন থানা এলাকা থেকে আব্দুর রকিব সরকার ও কাজি এহসান উল্লাহকে গ্রেফতার করেছিলেন। এসটিএফের দাবি, তারাও আল-কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশীয় শাখার সদস্য। মূলত বাংলাদেশ এবং ভিন্ রাজ্য থেকে আসা জঙ্গিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করত রকিব। গোয়েন্দারা জানান, রকিবকে জেরা করেই উঠে আসে নাসিমুদ্দিনের নাম। কিন্তু রকিবদের গ্রেফতারের পরেই গা-ঢাকা দিয়েছিল নাসিমুদ্দিন। রকিবের সঙ্গে তার আলাপ হয় হাওড়ার বাঁকড়ার একটি মাদ্রাসায়। তার পরেই দু’জনে ওই সংগঠনের হয়ে কাজ শুরু করে। গোয়েন্দারা জানান, গত দশ মাস ধরে খোঁজ চলছিল নাসিমের। সে অসম, ওড়িশা, বিহার-সহ বিভিন্ন রাজ্যের ধর্মস্থানে লুকিয়ে থাকত। কিন্তু কোথাও এক-দেড় মাসের বেশি থাকত না। কিছু দিন আগে সে দাদপুরের হাজিপাড়ায় মামার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল বলে গোয়েন্দারা জানতে পারেন। নাসিমুদ্দিনের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছে।
নাসিমের মামা শেখ গোলাম মোস্তাফা এ দিন জানান, ভাগ্নে গত রবিবার বিকেলে তাঁদের বাড়িতে আসে। স্থানীয় ও পুলিশি সূত্রের খবর, এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ এসটিএফের জনা দশেক কর্মীর একটি দল ওই বাড়িতে হানা দেয়। শাসন থানার গত বছরের একটি মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে নাম আছে নাসিমের।