গঙ্গার ভাঙনে বিপর্যস্ত সংসার। শমসেরগঞ্জের ধানঘরায়। তলিয়ে গিয়েছে হাজার একর কৃষিজমি। ছবি: জীবন সরকার
ভাগীরথীর ভাঙনে তলিয়ে গেল প্রায় দেড় হাজার মিটার কৃষি-জমি। নদীগর্ভে বিলীন প্রায় ১০০ টিরও বেশি লিচু গাছ। ঘরের দরজায় এসে পড়েছে গঙ্গা, তাই ভাঙনে আতঙ্কিত হয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার হিড়িক পড়েছে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের ধানঘরা গ্রামে। বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সারা রাত ঘুম বন্ধ। গঙ্গা গ্রাস করে নিতে পারে, এই আশঙ্কায়, ১০০টিরও বেশি বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। আস্ত গ্রামই চিন্তায়।
ভাঙনে তলিয়ে গেলেও নেই পর্যাপ্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা। ফলে কার্যত ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা। কার্যত গৃহহীন অবস্থায় কোথায় যাবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন এলাকার বাসিন্দারা। আতঙ্কে ঘরবাড়ি ভাঙতে শুরু করেছেন এলাকাবাসীরা।
গঙ্গা ভাঙন শমসেরগঞ্জের অন্যতম বড় সমস্যা। দীর্ঘ দিন ধরে গঙ্গার ভাঙনে বসত বাড়ি-ঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন শতাধিক মানুষ। তিন ফসলা জমি হারিয়ে কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা।
ভাঙন রোধে প্রশাসন কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোকে বারবার অভিযোগ জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের।
এ দিন গঙ্গা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান শমসেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম ও মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আনারুল হক। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাসও দেন। স্থানীয় বিডিও জয়দীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি ভাঙন প্রতিরোধ দফতরে জানিয়েছি।’’
সেচ দপ্তরের বাস্তুকার কল্পতরু পাল বলেন, ‘‘ধানঘড়ায় ভাঙন রোধের কাজ চলছে। ভরা গঙ্গা। যে জায়গায় ভাঙন হচ্ছে সেখানে গভীরতা অনেক বেশি থাকায় বাঁশের খাঁচা ফেলে আপাতত ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। খরার সময় ভাল ভাবে কাজ করা হবে। তার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ তিনি জানান, ধানঘরায় ৬০০ মিটার ও পাশের কামালপুরে ৪০০ মিটার এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ হবে। কিন্তু এখন তাঁরা কোথায় যাবেন, জানেন না ধানঘরার মানুষ।