ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে প্রথমে বগটুই গ্রামের কিছু বাড়িতে আগুন লাগিয়ে ন’জনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনার তদন্তে নেমে পরে তার যোগসূত্রে ভাদু শেখের হত্যাকাণ্ডেরও তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই। আবার তাদের অগ্রগতির সূত্রে বীরভূমের রামপুরহাটে বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান ভাদুকে খুনের ঘটনার তদন্তে উদ্যোগী হল ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাদু-হত্যার তদন্তে নেমে বড়সড় আর্থিক লেনদেনের হদিস পেয়েছে সিবিআই। মূলত আর্থিক লেনদেনের গন্ডগোলেই ভাদু খুন হন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। গত কয়েক বছরে ভাদুর রোজগার উল্কার গতিতে বেড়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। সেই সব বিষয়ে তদন্ত চাইছে ইডি। সম্প্রতি ভাদুর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে বলেও জানিয়েছে সিবিআই। সেই সব নথি যাচাই করে সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের দাবি, বালি, পাথর ও গরু পাচারের লভ্যাংশের কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে কয়েক বছরে। ভাদু-ঘনিষ্ঠ লালন শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েও বহু নথি উদ্ধার হয়েছে।
হাই কোর্টের নির্দেশেই ওই উপপ্রধানের হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই। মাসখানেক আগে ভাদু খুনের জেরে বগটুই গ্রামের হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল হাই কোর্ট। পরে উপপ্রধান খুনের তদন্তের দায়িত্বও সিবিআই-কে দেওয়ার জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন জানানো হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, ভাদু খুন ও বগটুইয়ের ঘটনা পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। ভাদু খুনের বদলা হিসেবেই বগটুইয়ের কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাতে পুড়ে মারা যান ন’জন। হাই কোর্ট প্রথমে বগটুই কাণ্ড, পরে ভাদু খুনের তদন্তভারও দেয় সিবিআই-কে।
ভাদু খুনের পরে বগটুই গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় লালনই মূল অভিযুক্ত বলে সিবিআইয়ের দাবি। সেই ঘটনার পর থেকে লালন ফেরার। তার বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, এমনকি হার্ড ডিক্সও গায়েব। তবে তল্লাশি চালিয়ে লালনের বাড়ি থেকে হিসেবপত্রের কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।
ইডি-র তদন্তকারীদের দাবি, ভাদু ও লালনের বাড়িতে পাওয়া নথি যাচাই করে দেখা গিয়েছে, আর্থিক লেনদেনের শিকড় অনেক গভীরে। বালি, পাথর ও গরু পাচারের লভ্যাংশের টাকা বিভিন্ন স্তরের অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে পৌঁছেছিল। সে-সবই খতিয়ে দেখতে চায় ইডি।