কোমর বাঁধছে রাজ্য সরকারের কর্মচারী মহল। প্রতীকী ছবি।
পুজোয় সরকারি ছুটির তালিকা বেশ লম্বা। তবে উৎসবের জোয়ারে পুরোদস্তুর ভেসে না-গিয়ে বকেয়া ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা আদায়ে পুনরায় লড়াই চালানোর জন্য কোমর বাঁধছে রাজ্য সরকারের কর্মচারী মহল।
মামলাকারী কর্মী সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, পুজো পর্ব মেটার পরেই ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই সর্বোচ্চ আদালতে সেই আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি চালাতে হচ্ছে কর্মীদেরও। রাজ্য সরকার শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলে সেই মামলার খরচ চালানোর জন্য অর্থসাহায্য দিতে এগিয়ে আসছেন সাধারণ কর্মীরাই।
অন্যতম মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই সময়েও ডিএ মামলা নিয়ে কর্মীদের তরফে খোঁজখবর নেওয়ায় কোনও বিরাম নেই। যাঁর যেমন সাধ্য, সংগঠনকে টাকা পাঠাচ্ছেন কর্মীদের অনেকেই। ফলে আমাদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে যাচ্ছে। প্রাপ্য ডিএ আদায়ে আমরাও সর্বোচ্চ পদক্ষেপ করব।”
কনফেডারেশনের বক্তব্য, ডিএ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট কর্মচারীদের পক্ষে রায় দিয়েছিল। উচ্চ আদালতের তিন মাসের সময়সীমাও অতিক্রান্ত। সেই রায় পুনর্বিবেচনা করার জন্য রাজ্য সরকার আদালতে যে-আর্জি জানিয়েছিল, তা-ও খারিজ হয়ে গিয়েছে। আদালত অবমাননা নিয়ে দায়ের হওয়া মামলায় ৪ নভেম্বরের মধ্যে প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তাদের জবাবি হলফনামা দেওয়ার কথা। পুজোর পরে আদালত খুললেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে রাজ্য। তাই প্রস্তুতি চালাতে হচ্ছে কর্মী সংগঠনকেও। শুধু কনফেডারেশন নয়, ফের লড়াইয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে অন্য কর্মচারী সংগঠনগুলিও। রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহ বলেন, “পুজোর ছুটির আগেও ডিএ নিয়ে আমরা সারা রাজ্যে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছি। পুজোর পরে ২৪ ঘণ্টার জন্য কাজ স্তব্ধ করে দেওয়ার মতো আন্দোলনেও যেতে পারি আমরা। সে-ক্ষেত্রে দায়ী থাকবে সরকারই।”
কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, “বিজয়া সম্মিলনীতেই আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করব। সুপ্রিম কোর্টেও ক্যাভিয়েট করা থাকবে। প্রস্তুতি রয়েছে।”এই অবস্থায় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের প্রবীণ নেতা মনোজ চক্রবর্তীর অভিমত, “ডিএ এবং সার্বিক দাবিদাওয়া নিয়ে কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া স্বাভাবিক প্রবণতা। পরিস্থিতি বুঝে দ্রুত ডিএ-রায় রূপায়ণ করা উচিত সরকারের।”