—প্রতীকী ছবি।
সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে ১৬ জুলাই পর্যন্ত সাময়িক স্বস্তি পেয়েছেন তাঁরা। যদিও যত সময় যাচ্ছে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়া শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের দুশ্চিন্তা ক্রমশই বাড়ছে। চাকরি হারানো অথচ যোগ্য বলে দাবি করা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশের মতে, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) যে ভাবে বারবার তাদের অবস্থান বদল করছে, তাতে তাঁরা একেবারেই স্বস্তিতে নেই।
২০১৬ সালের এসএসসি-র মাধ্যমে চাকরি পাওয়া মোট ২৫৭৫৩ জনের পুরো প্যানেল গত ২২ এপ্রিল বাতিল করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। পুরো প্যানেল বাতিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় এসএসসি। তাদের দাবি, সে বার প্যানেল থেকে ৫২৫০ জনের বেআইনি নিয়োগের কথা ইতিমধ্যেই হাই কোর্টকে হলফনামা পেশ করে জানিয়েছে তারা। এসএসসি-র দাবি, পুরো প্যানেল কী ভাবে বাতিল করল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ?
হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে ওই প্যানেলে থাকা এবং যোগ্য বলে দাবি করা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরাও। সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই মামলাটির দু’বার শুনানি হয়েছে। সর্বশেষ শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে জানায়, ১৬ জুলাই পরবর্তী শুনানি হবে। ততদিন পর্যন্ত ওই প্যানেলে থাকা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বহাল থাকবে।
যোগ্য বলে দাবি করা শিক্ষক মৌমিতা সরকার বলেন, ‘‘আমরা উদ্বিগ্ন। ১৬ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের শুনানির দিকে তাকিয়ে আছি। এসএসসি-র উপরে খুব একটা ভরসা করতে পারছি না। তারা বারবার নিজেদের অবস্থান বদল করেছে। প্রথমে হাই কোর্টকে বলল, যোগ্য-অযোগ্যদের মধ্যে বিভাজন করা সম্ভব নয়। তারপর সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে বলল, যোগ্য এবং অযোগ্যদের বিভাজন সম্ভব।"
চাকরি হারানো শিক্ষকদের একাংশের আশঙ্কা, ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফলের পরে এসএসসি-র যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা সংক্রান্ত বয়ানও আবার পাল্টে যাবে না তো? এখন আসন্ন ভোটের কথা ভেবে সুপ্রিম কোর্টে যোগ্য অযোগ্যদের বিভাজন সম্ভব বলেনি তো? মৌমিতার মতে, ‘‘যোগ্যদের তালিকা প্রমাণ-সহ দিতে হবে। কারণ, যোগ্যদের তালিকার মধ্যে যদি ফের কোনও অযোগ্য প্রার্থী ঢুকে থাকে এবং সেই তালিকা নিয়ে পরবর্তী কালে কেউ যদি ফের চ্যালেঞ্জ করেন, তখন সেটা আবার বিচারাধীন হয়ে যাবে। আমরা কি এই অনিশ্চয়তার মধ্যে পুরো চাকরিজীবন কাটাব? আমরা চাই উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট-সহ সমস্ত কিছুর প্রমাণ-সহ যোগ্যদের তালিকা দিক এসএসসি।’’
আর এক শিক্ষক বৃন্দাবন ঘোষ বলেন, ‘‘এখন স্কুলে গরমের ছুটি চলছে। স্কুল খুললে আমরা যোগ দেব। যে রকম আগে ক্লাস করতাম, সেরকমই করব।’’ তবে ফের এসসসি অফিস অর্থাৎ সল্টলেকের আচার্য সদন অভিযান করার কথা বলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে যোগ্যদের তালিকা স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করার দাবি নিয়ে ডেপুটেশন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি বিচারাধীন বলে স্কুল সার্ভিস কমিশন কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।