ভোটের ডায়েরি

গাছতলায় বসে বাসিন্দারা। বয়সে তরুণ প্রার্থী খাতায় নোট নিচ্ছেন। যেন শান্তিনিকেতনের আম্রকুঞ্জ! ছাত্র-শিক্ষকের অবস্থানটা উল্টে গিয়েছে। বৃত্ত থেকে কেউ বলছেন, ‘বহুতল তৈরি রুখতে হবে, কি পারবি তো?’ কেউ বলছেন, ‘রাস্তার ধারে সুন্দর বাগান করা যায় না? আমরা আছি ভাল কাজে!’ নদিয়ার কল্যাণীতে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল ও সিপিএম দুই তরুণীকে প্রার্থী করেছে। এই প্রসঙ্গে সিপিএমের মৌসুমী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আশ্বাস দেওয়ার আগে সবার বক্তব্য তো শোনা প্রয়োজন, নাকি?’’ তৃণমূলের নিবেদিতা বসু যোগ করেন, ‘‘যাঁদের কোলে-পিঠে মানুষ হয়েছি, তাঁদের থেকেই প্রথম ভোটের পাঠ নিচ্ছি।’’

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১৩
Share:

ভোটের পাঠ

Advertisement

গাছতলায় বসে বাসিন্দারা। বয়সে তরুণ প্রার্থী খাতায় নোট নিচ্ছেন। যেন শান্তিনিকেতনের আম্রকুঞ্জ! ছাত্র-শিক্ষকের অবস্থানটা উল্টে গিয়েছে। বৃত্ত থেকে কেউ বলছেন, ‘বহুতল তৈরি রুখতে হবে, কি পারবি তো?’ কেউ বলছেন, ‘রাস্তার ধারে সুন্দর বাগান করা যায় না? আমরা আছি ভাল কাজে!’ নদিয়ার কল্যাণীতে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল ও সিপিএম দুই তরুণীকে প্রার্থী করেছে। এই প্রসঙ্গে সিপিএমের মৌসুমী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আশ্বাস দেওয়ার আগে সবার বক্তব্য তো শোনা প্রয়োজন, নাকি?’’ তৃণমূলের নিবেদিতা বসু যোগ করেন, ‘‘যাঁদের কোলে-পিঠে মানুষ হয়েছি, তাঁদের থেকেই প্রথম ভোটের পাঠ নিচ্ছি।’’

Advertisement

জন্মদিনের শুভেচ্ছা

শিয়রে পুরভোট। কাজের চাপে জন্মদিনটা ভুলে গিয়েছিলেন শান্তিপুরের বিধায়ক তৃণমূলের অজয় দে। বিদায়ী কাউন্সিলর এ বার প্রার্থীও বটে। বুধবার সাতসকালে তাঁর জন্মদিনের কথা মনে পড়ল মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পাওয়ার পরে! অজয়বাবু বলছেন, ‘‘আরে আমিই নিজের জন্মদিনের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রী আমার জন্মদিনের কথা মনে রেখেছেন! আমি আপ্লুত। এ আমার সেরা পাওনা।’’ বুধবার শান্তিপুর থানার এক আধিকারিক মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তা অজয়বাবুর হাতে তুলে দেন।

প্রণাম বৃত্তান্ত

অনেক খেলোয়াড় ঘাস প্রণাম করে তবে মাঠে নামেন। বৈদ্যবাটির ৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ সরকার ওরফে কলু প্রচারে নামছেন প্রতিপক্ষ কংগ্রেস প্রার্থী অমিয় মুখোপাধ্যায় ওরফে ‘থাকোকাকা’র পা ছুঁয়ে প্রণাম করে। কলু পঞ্চাশ পেরিয়েছেন। থাকোবাবু তাঁর থেকে চার দশকের সিনিয়র। কলুর কথায়, ‘‘হোক প্রতিপক্ষ! থাকো কাকাকে শ্রদ্ধা করি।’’ আর ‘থাকোকাকা’ কলুর মাথায় হাত ছুঁইয়েই তৃণমূলের ‘অনাচারের’ বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।

নামের আলো

চলমান গ্লোসাইন! পুরুলিয়ার ২২ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দুই তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে ভোটের প্রচার লেখা গ্লোসাইন বোর্ড বয়ে নিয়ে চলেছেন জনা চারেক তৃণমূল কর্মী। মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় এই দৃশ্যই দেখা গেল। বাহকের পিঠের ব্যাগে ভরা রয়েছে ব্যাটারি। তাতেই এলইডি লাইট জ্বলছে, অন্ধকারেও উজ্জ্বল দুই প্রার্থীর নাম।

ভোটারের ধাঁধা

‘‘লোকসভায় দাপিয়ে বেড়িয়েছিল। কিন্তু পুরভোটে বিশেষ একটা নজরেই পড়েনি। বলতো কী?’’ কুলফি মালাই খেতে খেতে কেন্দুয়াডিহির একটি মাঠের পাশে এক বন্ধুকে প্রশ্নটা ছুঁড়েছিল সৌরভ নন্দী। বন্ধু খানিক মাথা চুলকেও উত্তর না খুঁজে পাওয়ায় পরে সৌরভই ধাঁধার সমাধান করে বলে, “মোদী মুখোশ।” তবে শেষ দিনের প্রচারে অবশ্য বাঁকুড়া পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী জয়দেব মণ্ডলের কিছু অনুগামীকে মোদী মুখোশ পরে প্রচারে বেরতে দেখা গেল। লোকসভার মূল অস্ত্র মোদী মুখোশ পুরভোটে ব্রাত্য কেন? বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি জীবন চক্রবর্তী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে অনেক উন্নয়ন করেছেন মোদীজি। তাই এ বার আর মুখোশ নয়, তাঁর কাজই হাতিয়ার।’’

সাতসকালে প্রচার

অভ্যাস না থাকলেও সকালেই ঘুম ভেঙে যাচ্ছে প্রার্থীদের। ভোটারদের ধরতে কেউ ছুটছেন জঙ্গিপুরের সবুজ দ্বীপে, কেউ ছুটছেন ধুলিয়ানে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের আড্ডায়। বেশ কয়েক দিন ধরেই এই দুটি পুরসভায় গোলমাল লেগেই রয়েছে। এরই মধ্যে বুধবার তৃণমূলের জনাকয়েক প্রার্থী প্রচার সারলেন প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে। করজোড়ে কুশল বিনিময়। আর ভোট দেওয়ার জন্য অনুরোধ।

মরেও শান্তি নেই

জঙ্গিপুরে মারা গিয়েছেন ৮০ বছরের এক বৃদ্ধা। বৃদ্ধার বাড়িতে আসতে শুরু করেছেন প্রার্থীরা। কংগ্রেসের প্রার্থী এসে বসে পড়লেন মৃতার পায়ের কাছে। কিছুক্ষণের মধ্যে হাজির বিজেপি প্রার্থী বসে পড়লেন মাথার কাছে। হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলেন সিপিএমের প্রার্থী। ভিড়ের মধ্যে থেকে উড়ে এল টিপ্পনিটা—‘‘ওরে, ওকে ঠাকুমার কোলে বসতে দে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement