(বাঁ দিকে) রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ এবং (ডান দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
ভোট-পর্ব জুড়ে বিরামহীন হানাহানি এবং মৃত্যু-মিছিলের পরে গভীর রাতে অফিস ছেড়ে যাওয়ার আগে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সংক্ষিপ্ত মন্তব্য ছিল, ‘ভোট শান্তিপূর্ণই হয়েছে।’
শুক্রবার, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে পাঠানো তাঁর রিপোর্টেও সেই সংক্ষিপ্ত বাক্যবন্ধই জুড়ে দিয়েছেন কমিশনার রাজীব সিংহ— ভোট এবং গণনা পর্ব শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় গণনা কেন্দ্রের বাইরে জমায়েতের খবর ছাড়া আর কোনও বিশৃঙ্খলার খবর আসেনি।
রাজ্য জুড়ে নির্বাচনী-পর্ব চলাকালীন দশ দফা প্রশ্ন এবং পরামর্শ দিয়ে নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ফল প্রকাশের তিন দিন পরে, শুক্রবার রিপোর্ট আকারে সেই চিঠির জবাব রাজভবনে পাঠালেন রাজীব। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মোতাবেকই স্পর্শকাতর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন হয়েছে, রিপোর্টে কমিশনার তা বিস্তারিত জানিয়েছেন বলে রাজভবন সূত্রের খবর। রাজ্যপালের পরামর্শকেও যে কমিশন যথাযথ মান্যতা দিয়েছে, রিপোর্টে তারও উল্লেখ রয়েছে বলে খবর।
রিপোর্টে কমিশনার জানিয়েছেন, ৪৮৩৮টি স্পর্শকাতর বুথের সব ক’টিতেই মোতায়েন ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী কিংবা সশস্ত্র পুলিশ। সাধারণের দাবি মেনে বাহিনীকে ওই সব এলাকায় আরও দশ দিন রেখেও দেওয়া হচ্ছে। বিরোধীদের দাবি, হিংসার ছায়ায় তামাম ভোট পর্ব চলার পরে এখন বাহিনীকে রেখে দিয়ে রাজ্যপালের নির্দেশকে মান্যতা দেওয়া নিতান্তই প্রহসন। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় বাহিনীর দায়িত্বে থাকা আইজি (বিএসএফ) আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন, ভোটের দিন বিভিন্ন জেলায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাহিনীকে অন্তত ৮ রাউন্ড শূন্যে গুলি ছুড়তে হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও কর্মীর বিরুদ্ধে ১১টি এফআইআর-ও দায়ের করেছে তারা।
রাজভবন সূত্রের খবর, ভোটের দিন রাজভবনের ‘পিস রুম’ থেকে অন্তত দু’হাজার অভিযোগ কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছিল। এ দিনের রিপোর্টে কমিশনের দাবি, সব অভিযোগই খতিয়ে দেখা হয়েছে। যদিও বিজেপি-বাম এবং কংগ্রেসের তরফে রাজভবনের কাছে স্পষ্টই অভিযোগ করা হয়েছে, কমিশনের এ হেন দাবি ‘ডাহা মিথ্যে’।