বেলারানি জানা। —নিজস্ব চিত্র।
দিনকয়েক ধরে মৃত ছেলের দেহ আগলে বসেছিলেন মা। তবে ঘুণাক্ষরেও তা টের পাননি পাড়াপ্রতিবেশীরা। সোমবার সকালে দুর্গন্ধে টেকা দায় হয় তাঁদের। খবর পেয়ে পুলিশ এসে এক যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় দুর্গাপুরের এই ঘটনায় হতবাক স্থানীয়েরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার দুর্গাপুরের সেকেন্ডারি এলাকার নিজেদের বাড়ি থেকে সুশীল জানা (৪০)-র পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার দেহটি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দিনকয়েক আগেই সুশীলের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান তদন্তকারীদের।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, বৃদ্ধা মা বেলারানি জানার সঙ্গে তাঁদের একতলা বাড়িতে থাকতেন সুশীল। তাঁর স্ত্রী আগেই তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সোমবার সকাল থেকেই তাঁদের বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বার হতে থাকলে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। তার পরই পুলিশে খবর দেন তাঁরা।
আত্মীয়দের দাবি, মা-ছেলে দু’জনেই মানসিক ভাবে সুস্থ ছিলেন না। সুশীলের ভাইঝি শ্রেয়সী জানা বলেন, ‘‘পরশু দিনও কাকাকে দেখেছিলাম। ওঁরা আমাদের থেকে আলাদা থাকেন। ঠাকুরমা (বেলারানি) গত কাল এসে মাকে বলেন, ‘ছেলের শরীর খারাপ। হাসপাতালে ভর্তি করাতে কিছু টাকা লাগবে।’ সেই টাকা নিয়ে চলে যান তিনি।’’ সুশীলের সঙ্গে তাঁর আত্মীয়দের সুসম্পর্ক ছিল না বলে দাবি শ্রেয়সীর। তাঁর কথায়, ‘‘কাকুর সঙ্গে আমাদের ভাল সম্পর্ক ছিল না। তবে ঠাকুরমার সঙ্গে কথাবার্তা হত। আজ সকালে তিনিই সকলকে বলছিলেন, ‘ছেলে মারা গিয়েছে।’ ’’
ছেলে যে মারা গিয়েছে তা বুঝতে পারেননি বলে বেলারানির দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘জ্বরে প্রায় বেহুঁশ হয়ে পড়েছিলাম। ছেলেরও শরীর ঠিক ছিল না। সকলে জানতে চাইছিল, দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে কেন? বলেছিলাম, বমি করেছে বলেই এমন দুর্গন্ধ বেরচ্ছে।’ ছেলে কখন মরে গিয়েছে, তা কী করে জানব?’’
কবে মারা গিয়েছেন সুশীল? তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের পরই সুশীলের মৃত্যুর দিনক্ষণ এবং কারণ জানা যাবে।