মৃত রামকৃষ্ণ মণ্ডল এবং লীলারানি মণ্ডল।
ছাদের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এক দম্পতিকে খুন করা হল। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার টুনিঘাটায় মঙ্গলবার রাতে ওই ঘটনা ঘটেছে। মৃতেরা রামকৃষ্ণ মণ্ডল (৫২) এবং তাঁর স্ত্রী লীলারানি মণ্ডল (৫১)। পুলিশ জানিয়েছে, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ওই দম্পতির মাথায় গুলি চালানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, প্রতিবেশী এক যুবক ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে ওই দম্পতিকে খুন করেছে। তন্ময় বর নামের ওই যুবক যদিও এখনও অধরা।
মৃতদের পরিবারের দাবি, গত কাল রাতে বাড়ি লাগোয়া নারকেল গাছ বেয়ে কেউ এক জন ছাদে ওঠে। তার পর ছাদের দরজা ভেঙে ঢুকে আসে বাড়ির ভিতরে। প্রথমে মণ্ডল পরিবারের লোকজন ভেবেছিলেন, বাড়িতে হয়তো চোর ঢুকেছে। তখনই তাঁরা তন্ময়কে দেখতে পান।
আরও পড়ুন: বউয়ের সঙ্গে ফেসবুক চ্যাট! যুবককে খুনই করে দিল রাগী বর
পরিবারের দাবি, এর পরেই সে গুলি চালাতে থাকে। এক দম কাছ থেকে রামকৃষ্ণ এবং লীলারানির মাথায় গুলি করা হয় বলে অভিযোগ।
অভিযুক্ত তন্ময় বর।
ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত তন্ময়। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, বছর দুয়েক আগে রামকৃষ্ণের ভাইঝিকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে তন্ময়ের বিরুদ্ধে। ওই কিশোরীকে নিয়ে তন্ময় বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুন:পড়তে চায় বোন, গুলি চালিয়ে দিল দাদা
দেশে ফিরে এলেও সেই সময় তার স্ত্রী নাবালিকা হওয়ায় তন্ময় আর হাবড়ায় আসেনি। পরে রামকৃষ্ণের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করে। কিশোরী ফিরে যায় নিজের পরিবারে। বিচারে তন্ময়ের তিন মাসের কারাবাস হয়। ২০১৯ সালে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে মাঝেমধ্যেই মণ্ডল পরিবারের সঙ্গে তার বিবাদ বাধত বলে প্রতিবেশীদের দাবি। কিছু দিন আগে অ্যাসিড হামলার ভয় দেখানো হয়েছিল ওই কিশোরীকে। তখনও তন্ময়ের বিরুদ্ধে থানায় হুমকির অভিযোগ জানান রামকৃষ্ণ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
দম্পতি খুনের পর ওই কিশোরী জানিয়েছেন, এক সময় ভয় পেয়ে তিনি তন্ময়ের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন। না গেলে, মুখে অ্যাসিড মারা হবে বলে হুমকি দিত তন্ময়। পরে বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েও ধরা পড়ে তন্ময়। জেল থেকে বেরনোর পর ফের হুমকি দিতে শুরু করে ওই যুবক। সেই আক্রোশেই খুন বলে ধারণা তার।