উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। ফাইল চিত্র।
অতিমারির আবহে এ-পর্যন্ত শিক্ষা ক্ষেত্রের ছবিটা যা, তাতে ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে রাজ্যে কোনও পরীক্ষা নেই বলেই উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনকে জানালেন রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন। শিক্ষা শিবিরের জল্পনা, করোনার জন্য বন্ধ স্কুল-কলেজ কবে খুলবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তার উপরে কমিশন-কর্তাকে শিক্ষাসচিব যা জানালেন, তাতে ধরে নেওয়া যায়, রাজ্যের স্কুল স্তরের দুই বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক আর উচ্চ মাধ্যমিকও মে-র আগে হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ভোট নির্দিষ্ট সময়েই হবে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। তারই অঙ্গ হিসেবে বাংলার স্কুল-কলেজের হালহকিকত ও পরীক্ষাসূচি নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিক্ষাসচিব মণীশের সঙ্গে কথা হয় সুদীপের। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত রাজ্যের কোথায় কী পরীক্ষাসূচি আছে, শিক্ষাসচিবের কাছে তা জানতে চান কমিশন-কর্তা। ঘূর্ণিঝড় আমপানের দাপটে কোথায় ক’টি স্কুলের কী রকম ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষত সারাই হয়েছে কি না, কলেজ ভবনগুলির কী অবস্থা— সব কিছুরই খোঁজখবর নেন তিনি।
এ দিকে, আইসিএসই বোর্ডের সচিব জেরি অ্যারাথুন শুক্রবার তাঁদের সব স্কুলের অধ্যক্ষদের জানান, বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট জানার পরে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে। পরীক্ষা-কক্ষে বসে খাতায়-কলমে উত্তর লিখতে হবে পড়ুয়াদের।
আরও পড়ুন: কুয়াশা বিভ্রাট কাটিয়ে শহরে অমিত শাহ, মধ্যরাতেও বিমানবন্দরে সমর্থকদের ঢল
পরীক্ষার আগে মাস দুয়েক ক্লাস করতেও আগ্রহী তাঁরা। এ দিন দেশের সব আইসিএসই স্কুলের অধ্যক্ষদের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেন অ্যারাথুন। কলকাতার বিভিন্ন আইসিএসই স্কুলের অধ্যক্ষেরা জানান, করোনা পরিস্থিতি এবং ভোটের আবহে কী ভাবে বোর্ড পরীক্ষা হবে, মূলত সেই বিষয়েই আলোচনা হয় বৈঠকে। অ্যারাথুন তাঁদের জানান, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, আগামী
আরও পড়ুন: দল ছাড়ার কথা বলে ভুল করেছি, দিদির কাছে ক্ষমা চাইব: জিতেন্দ্র
বছরের গোড়ায় আরও কিছু রাজ্যে ভোট আছে। সর্বভারতীয় বোর্ড বলেই আইসিএসই বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে পরীক্ষাসূচি তৈরি করতে পারছে না। ভোট কবে, তা জানতে চেয়ে তিনি ইতিমধ্যে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন। ভোটের দিন ঘোষণার পরেই পরীক্ষাসূচি জানানো হবে।
“বোর্ড পরীক্ষার আগে আমরা অন্তত দু’মাস ক্লাস করতে চাই। বিশেষত, যারা আগামী বছর দশম ও দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষা দেবে, তাদের দু’মাস প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করা হবে। সে-ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যদি জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে কিছু ছাত্রছাত্রীকে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেয়, তা হলে ভাল হয়,” বলেন অ্যারাথুন।
আইসিএসই বোর্ডের পরীক্ষা এ বার অনলাইনে হবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছিল পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। অ্যারাথুন বলেন, “করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়েই পেন ও পেপারে পরীক্ষা দিতে হবে ছাত্রছাত্রীদের।” কলকাতার একটি স্কুলের অধ্যক্ষ জানান, বোর্ড-সচিবের বক্তব্য, দেশের সব জায়গায় নেট সংযোগ ভাল নয়। লোডশেডিংয়েরও সমস্যা থাকতে পারে কোনও কোনও জায়গায়। ভোটের পরে মে, জুনে পরীক্ষা হলে তত দিনে করোনা পরিস্থিতিরও অনেকটা উন্নতি হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। পরিস্থিতি বুঝে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরীক্ষা হবে।