বিজেপি-কে চ্যালেঞ্জ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। নিজস্ব চিত্র।
সাভারকরের মুচলেকা নিয়ে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক আলোচনা করতে চান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রবিবার রাজ্যের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সাভারকরকে নিয়ে প্রশ্ন করা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, ‘কোন বিপ্লবী নেতা জেল থেকে মার্সি পিটিশন (ক্ষমা প্রার্থনা) করেন?’ তার চারটি বিকল্প উত্তর হিসাবে দেওয়া ছিল ‘ভি ডি সাভারকর’, ‘বি জি তিলক’, ‘শুকদেব থাপার’ ও ‘চন্দ্রশেখর আজাদ’। সাভারকরকে নিয়ে এমন প্রশ্ন আসায় ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতৃত্ব। প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্য বিজেপি-রসাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘সাভারকর কখনও মুচলেকা দেননি। মুচলেকা দিয়েছিলেন উৎপল দত্তরা। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই প্রশ্ন করা হয়েছে।’’ বিজেপি-র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এমন প্রশ্ন করে সাভারকরকে অপমান করা হয়েছে। সোমবার কলকাতার এক হোটেলে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে সাভারকার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন বিজেপি নেতৃত্বের প্রতি।নাট্যকার রাজনীতিক বলেন, ‘‘যিনি এমনটা বলেছেন, তাঁর সঙ্গে সাভারকারের বিষয় নিয়ে এক ঘণ্টা আলোচনা করতে আগ্রহী। তিনি আসুন, আমরা সাভারকার নিয়ে একটু আলোচনা করি। কীভাবে তাঁকে অপমান করা হয়েছে।’’
ইতিহাসের ঘটনার কথা উল্লেখ করে ব্রাত্য বলেন, ‘‘সাভারকার পাঁচবার মুচলেকা দিয়েছেন। এটা ঐতিহাসিক সত্য। তিনি অভিনব ভারতের মতো অসাধারণ বই লিখেছেন, এটা সত্য। তাঁকে রত্নগিরি জেল থেকে গরবেদা জেলে নিয়ে যাওয়া হয়, পাঁচটা মুচলেকা দেওয়ার পরে। ১৯২৫ সালে গিয়ে তাঁকে ছাড়া হয়। যে জেলে সাভারকর ছিলেন, সেখানেই ছিলেন আইবি রায়। অবিভক্ত পশ্চিমবঙ্গের সন্তান তিনি। তিনি গলায় দড়ি দিচ্ছেন। হাওড়ার ছেলে উল্লাসকর দত্ত পাগল হয়ে যাচ্ছেন। উন্মাদ হয়ে যাওয়ায় তাঁকে মাদ্রাজের পাগলা গারোদে পাঠাতে হয়েছিল। ওই জেলে পচছেন হেমচন্দ্র কানুনগো, বারীন ঘোষ, উল্লাসকর দত্তরা। কিন্তু তাঁরা একবারও মুচলেকা দেননি। আপনি তথ্যকে কীভাবে অস্বীকার করবেন? অপমান কেন হবে? কোথায় অপমান?’’
উৎপল দত্তর মুচলেকা নিয়ে বিজেপি-র অভিযোগ নিয়ে ব্রাত্যর জবাব, ‘‘উৎপল দত্ত মুচলেকা দিয়েছিলেন কিনা, সেটা জানা যায় না। তাঁর কোনও লেখা থেকে জানা যায় না যে তিনি মুচলেকা দিয়েছিলেন। কিন্তু সাভারকর যে মুচলেকা দিয়েছিলেন তার প্রমাণ আছে। তাঁর পাঁচটি চিঠিই ইংরেজদের আর্কাইভ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’