মাধ্যমিকে ইংরেজি প্রশ্নপত্র নিয়ে বিতর্কে সুকান্তের অভিযোগের জবাব দিলেন ব্রাত্য। —ফাইল চিত্র।
মাধ্যমিক পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ইংরেজি প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। যা নিয়ে তদন্ত করবে বলেছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘এটি প্রশ্নফাঁসের ঘটনা নয়, পরিকল্পিত অন্তর্ঘাত।’’ এই আবহে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আঙুল তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতির দিকেই। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এই পরিকল্পিত অন্তর্ঘাতের পিছনে মালদহের কোনও যোগ নেই তো!’’
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগকে আরও এক কদম এগিয়ে নিয়ে গিয়ে শুক্রবার ব্রাত্য যোগ করেন, ‘‘পর্ষদ সভাপতি বলছেন, এটা (প্রশ্নপত্র ফাঁস) অন্তর্ঘাত। আর এটা ঘটেছে মালদহে। যে জেলার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান সুকান্ত মজুমদার। এবং মালদহের সংলগ্ন জেলার উনি সাংসদ।’’ তার পরেই ব্রাত্যের সংযুক্তি, ‘‘এগুলির মধ্যে কোনও অন্তঃযোগ নেই তো?’’
তিনি বলেন, “কে পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে পাঠিয়েছে, সে ব্যাপারে জেলাশাসকের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। পর্ষদ সভাপতিও কথা বলেছেন। আশা করি, আগামী কালই বিষয়টি সামনে চলে আসবে।” তবে এই ঘটনায় পরীক্ষায় উপর কোনও প্রভাব পড়েনি বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “১২টায় পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আর পৌনে ২টোর সময় প্রশ্নপত্রের কয়েকটি পাতা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়। অর্থাৎ পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর কেউ ছবি তুলে প্রশ্নপত্রটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পাঠিয়েছে। ফলে পরীক্ষায় এর কোনও প্রভাব পড়েনি।”
শুক্রবার দুপুরে সুকান্ত একটি টুইট করেন। তাতে ছবি দিয়ে তিনি লেখেন, ‘‘সকাল থেকেই এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার ইংরেজি প্রশ্নপত্র বলে এই প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছু সময়ের সময়ের মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে কি না তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’ এ নিয়ে শুরু হয় চাপান-উতোর। কিছু ক্ষণ পরেই পর্ষদ সভাপতি রামানুজ জানান, ইংরেজি প্রশ্নপত্রের ২, ৩ এবং ১০ নম্বর পাতার ছবি তোলা হয়েছে। বেলা দেড়টা থেকে পৌনে ২টোর মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। কোনও এক পরীক্ষার্থী মোবাইলে ছবিটি তুলেছে। তাঁর কথায়, ‘‘আদালতের নির্দেশে আমরা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করতে পারি না। এই ঘটনায় পরীক্ষার উপর প্রভাব পড়েনি। কারণ, দেড় ঘণ্টা পরে ঘটনাটি ঘটেছে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকা নিষেধ। কিন্তু আমরা তো ‘মেটাল ডিটেক্টর’ ব্যবহার করি না। শিক্ষক-শিক্ষিকারাই নজর রাখেন।’’ সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘কোনও পরীক্ষার্থী দুষ্টুমি’ করে এমনটা করে থাকতে পারে।
আর এ নিয়ে ব্রাত্যের আশ্বাস, যা-ই ঘটুক, তা শনিবারের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। তিনি বলেন, “কে পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে পাঠিয়েছে, সে ব্যাপারে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। পর্ষদ সভাপতিও কথা বলেছেন। আশা করি, আগামিকালই (শনিবার) বিষয়টি সামনে চলে আসবে।” পাশাপাশি তিনি জানান, এর ফলে পরীক্ষায় কোনও প্রভাব পড়েনি।