Bratya Basu

শিক্ষা সম্মেলনে ‘ব্রাত্য’ বোস-নিযুক্ত উপাচার্যেরা, ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে তোপ দাগলেন শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষা সম্মেলনে রাজ্যপাল-নিযুক্ত উপাচার্যদের না ডাকার প্রসঙ্গে তাঁদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে কটাক্ষ করেন শিক্ষামন্ত্রী। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম-রায়ের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন ব্রাত্য।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৪১
Share:

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (বাঁ দিকে) এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যের শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে হওয়া শিক্ষা সম্মেলনে ডাকা হল না রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রাজ্যপাল নিযুক্ত উপাচার্যদের। তবে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন রেজিস্ট্রারেরা, যাঁরা প্রায় সকলেই রাজ্যের অনুমোদনক্রমে নিযুক্ত। শুধু তা-ই নয়, বৈঠকে উপাচার্যদের না-ডাকার প্রসঙ্গে তাঁদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলেও কটাক্ষ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশের কথা উল্লেখ করে ব্রাত্য জানান, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস যে প্রক্রিয়ায় উপাচার্যদের নিয়োগ করেছেন, তাকে ‘বেআইনি’ বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

Advertisement

আগামী ২১ এবং ২২ নভেম্বর বসছে সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর। তার আগে একটি বণিকসভার সহায়তায় শুক্রবার একটি শিক্ষা সম্মেলনের আয়োজন করেছিল শিক্ষা দফতর। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল দেশ-বিদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। শিক্ষা দফতরের তরফে এই সম্মেলনের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘এডুকেশন সিম্পোসিয়াম’। সম্মেলনে কৃত্রিম মেধা ছাড়াও উদ্ভাবনী নানা ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হয়। পড়ুয়া আদানপ্রদানের বিষয়েও আলোচনা চলে। অ্যারিজ়োনা স্টেট ইউনিভার্সিটি ছাড়াও একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতাপত্র (মউ) স্বাক্ষর করে শিক্ষা দফতর।

এই বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীকে উপাচার্যদের আমন্ত্রণ না-জানানো নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। ব্রাত্য বলেন, “ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের আচার্য তথা রাজ্যপাল যে ভাবে নিয়োগ করেছেন, সেটা বেআইনি।” এই প্রসঙ্গে ব্রাত্যের সংযোজন, “যাঁরা আমাদের বৈধ প্রতিনিধি আছেন, আমরা তো তাঁদেরই ডাকব। আমার মনে হয় না অনুপ্রবেশকারীদের ডাকার কোনও প্রয়োজন রয়েছে বলে।”

Advertisement

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে আচার্য সিভি আনন্দ বোসের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার এবং বোসের মধ্যে সংঘাতের ফলে রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও কোনও স্থায়ী উপাচার্য নেই। গত ২১ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পর গত ১৫ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিজেই সার্চ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শীর্ষ আদালত।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল এবং ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন)-কে তিন থেকে পাঁচ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম সুপারিশ করতে হবে সার্চ কমিটির জন্য। একই সঙ্গে, রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যকেও প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তিনি রাজ্য সরকারের সঙ্গে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বৈঠকে বসেননি? ওই দিনই বিচারপতি সূর্য কান্ত জানিয়েছিলেন, তাঁরা রাজ্যপালের উত্তরের উপর নির্ভর করে বসে থাকবেন না।

গত ৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজ্যপাল যাঁদের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন, তাঁরা কোনও সুযোগ-সুবি‌ধা পাবেন না। তাঁরা নিতে পারবেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও। আদালত এ-ও জানায় যে, রাজ্যপাল আর অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। সেই রায়ের প্রসঙ্গই শনিবার উল্লেখ করলেন শিক্ষামন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement