সুকন্যা মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলার তদন্তে উঠে এসেছিল অনুব্রত মণ্ডলের বেশ কয়েক বার লটারিতে লক্ষ্মীলাভের কথা। এ নিয়ে তদন্ত করতে বোলপুরে এসেছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। সমন পাঠিয়ে এই লটারি কাণ্ডের সঙ্গে জড়িতে বেশ কয়েক জনকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল সিবিআই। এ বার গরু পাচার মামলা নিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট-এর (ইডি) দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে সম্প্রতি পেশ করা চার্জশিটে অনুব্রতের লটারি জেতা নিয়ে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। ফলে, এ নিয়ে আবারও চর্চা শুরু হয়েছে।
ইডির চার্জশিটে অভিযোগ করা হয়েছে, বোলপুরে ‘গাঙ্গুলী লটারি এজেন্সি’ আগে থেকে অনুব্রতকে জানিয়ে দিত কে লটারি জিতেছেন এবং কত টাকার লটারি জিতেছেন। সেই মতো অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে লটারি বিজয়ীদের কাছ থেকে সেই টিকিট কিনে নিতেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। চার্জশিটে রয়েছে, এই পুরো ব্যাপারটায় মধ্যস্থতা করতেন বোলপুরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে মুন। সিবিআই ক্যাম্পে হাজিরা দিতে এসে একই অভিযোগ করেছিলেন লটারিতে এক কোটি টাকা জেতা বড় শিমুলিয়া গ্রামের শেখ নূর আলির বাবা কটাই শেখ। অনুব্রতের জেতা এক কোটি টাকার লটারির টিকিটটি আসলে নূরই কেটেছিলেন বলে অভিযোগ।
যদিও ‘গাঙ্গুলী লটারি এজেন্সি’র মালিক বাপি গঙ্গোপাধ্যায় অনুব্রতের সঙ্গে যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেছেন। ইডির চার্জশিট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গাঙ্গুলী লটারি কেবল একটি লটারি এজেন্সি। সেখান থেকে টিকিট বিক্রি হয়। কে পুরস্কার জিতল, কত টাকার পুরস্কার জিতল তা আমার দেখার বিষয় নয়। এর আগে পুরো বিষয়টিই আমি সিবিআই এবং ইডি আধিকারিকদের জানিয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন ‘‘অনুব্রতের সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ ছিল না। মুন টিকিটগুলি নিয়ে মধ্যস্থতা করেছিলেন। মুন আমাকে মোট তিনটে টিকিট দেখিয়েছিলেন। আমি শুধু সেগুলি ঠিক আছে কি না, দেখে দিয়েছিলাম।”
ইডির চার্জশিট প্রসঙ্গে কটাই শেখ বলেন, “লটারিতে এক কোটি জেতার টিকিটটা আমার ছেলে নূর কেটেছিল। তার পর থেকে তৃণমূলের লোকজন সেই টিকিট নেওয়ার জন্য আমাকে নানা ভাবে হুমকি দিতে থাকে। যার জন্য আমাকে সাত দিন ঘর ছাড়াও থাকতে হয়। এর পরে বাধ্য হয়ে সেই টিকিট তাদের হাতে তুলে দিই। আমাদের পুরো টাকাও দেওয়া হয়নি।”
ইডির চার্জশিট আরও দাবি করা হয়েছে, শুধু পাঁচ-ছ’টি লটারি টিকিট নয়, ইডির কাছে অনুব্রত দাবি করেছেন, বাপি গঙ্গোপাধ্যায়কে তিনি চেনেন এবং তিনি ও তাঁর মেয়ে সুকন্যা ১০ থেকে ১২ বার লটারি জিতেছেন। যদিও বাপি গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে বিশ্বজ্যোতির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাঁর ফোন বন্ধ আছে বলে জানা গিয়েছে।