নারদ-কাণ্ডে আরও বিপাকে পড়ল তৃণমূল নেতৃত্ব। সিবিআইয়ের পাশাপাশি তদন্ত শুরু করল ইডি-ও। নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে ইডি। যার জেরে এই নেতানেত্রীদের সমস্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ ইডি-র হাতে রয়েছে অভিযুক্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা।
ইডি সূত্রের বক্তব্য, নারদ স্টিং অপারেশনে তৃণমূলের নেতানেত্রীদের যে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল, তা কোথায় গেল, কোথায় খরচ হল, কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ল, মূলত তারই তদন্ত করবেন তাঁরা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, তার পরে সুপ্রিম কোর্টের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পর ১৭ এপ্রিল তৃণমূলের ১২ জন সাংসদ-বিধায়ক ও আইপিএস অফিসার এইচ এস মির্জার বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে সিবিআই। মূলত এই এফআইআর-এর ভিত্তিতেই ইডি নিজস্ব তদন্ত শুরু করেছে।
ইডি-র তদন্তকারী অফিসারদের ব্যাখ্যা, সিবিআই ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ (বি) ধারায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে মামলা করেছে। দুর্নীতি দমন আইনেও অভিযোগ হয়েছে। সেই অপরাধ ও দুর্নীতির টাকা কোথায়, কোন পথে গেল, মূলত তারই তদন্ত করবে ইডি। অভিযুক্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সম্পত্তির হিসেবনিকেশ চাওয়া হবে। সিবিআইয়ের থেকেও এ বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:সাঁড়াশি হানা দিয়েই সাফল্য চাইছে ইডি
নারদের স্টিং-অপারেশন হয়েছিল ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে। অভিযোগ, নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েলের থেকে তৃণমূলের নেতারা প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। ওই সময় থেকে অভিযুক্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য, আর্থিক লেনদেনের হিসেব চাওয়া হতে পারে। তার সঙ্গে ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া সম্পত্তির হিসেবও মেলানো হবে।
বিজেপি ও তৃণমূলের পাঞ্জার লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে আরও চাপে ফেলতেই ইডি-র এই তদন্ত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরে। বিজেপির নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র যুক্তি, ‘‘ইডি আইন অনুযায়ী যা করা দরকার, তা-ই করছে। সরকার বা বিজেপি তদন্তকে প্রভাবিত করতে চাইছে না।’’ আর কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী যা হওয়ার হচ্ছে, এ নিয়ে বলার কী আছে।’’