এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ফাইল চিত্র।
অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা ও তাঁর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারির পরে এ বার অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ চালকল মালিক রাজীব ভট্টাচার্যকেও দিল্লিতে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। দিল্লি যাবেনবলে জানিয়েছেন রাজীব ও মণীশ দু’জনেই। তবে সুকন্যা যাবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
গরু পাচারের তদন্তে নেমে আমোদপুরের বাসিন্দা, তথা তৃণমূলের আমোদপুর অঞ্চল কমিটির সভাপতি রাজীবকে এর আগে একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য রাজীব কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ৬৬ লক্ষ টাকা জমা দেন বলে তদন্তে জানতে পারে সিবিআই। রাজীবও সেই কথা স্বীকার করে জানিয়েছিলেন, তিনি ধার হিসেবে ওই টাকা দিলেও ফেরত পাননি। পরে অবশ্য তৃণমূলের মঞ্চ থেকেই রাজীব দাবি করেন, এক জন মৃতপ্রায় মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা করে তিনি কোনও ভুল করেননি। সিবিআইয়ের পর এ বার ইডি-র তলব পেলেন রাজীব।
আগামী ৩ নভেম্বর ইডি তাঁকে দিল্লিতে তলব করেছে বলে জানিয়েছেন রাজীব। তিনি বলেন, ‘‘কে যাবে বলতে পারব না, তবে আমি যাব। সিবিআই যত বার ডেকেছে, গিয়েছি। যা তথ্য চেয়েছে, দিয়েছি। ইডিও আয়ব্যয় সংক্রান্ত কিছু তথ্য চেয়েছে। তা জমা দিতে যাব।’’ দিল্লিতে যাবেন বলে জানিয়েছেন অনুব্রতের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিও। ২ নভেম্বর তাঁকে দিল্লিতে তলব করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। মণীশ বলেন, “আমি এখনও পর্যন্ত ইডি-র কোনও নোটিস পাইনি। তবে আমি তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করব। দিল্লি ডেকে পাঠালে সেখানেও যাব।”
গরু পাচার মামলায় এর আগে ২৭ অক্টোবর ইডি অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যাকে তলব করলেও তিনি যাননি। এ বার ২ নভেম্বর তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ইডির দাবি, ২০১৫-র পর থেকে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা সুকন্যার সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক আমানত অস্বাভাবিক গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর চিকিৎসার জন্য ভিন্ রাজ্যে থাকার কথা জানিয়ে তদন্তকারীদের কাছে কয়েক সপ্তাহ সময় চেয়েছেন সুকন্যা। তবে ২ তারিখ তিনি দিল্লি যাবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
এ দিনই সিউড়িতে দলের কর্মসূচিতে এসে অনুব্রত-কন্যাকে ইডির তলব নিয়ে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খারাপ লাগে। বাবা এত দুর্নীতি করেছেন যে, মেয়েকেও জড়িয়ে দিয়েছেন। মেয়েও এখন বড় দুর্নীতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা-ই হোক না কেন, আসল সত্যিটা বেরিয়ে আসুক এবং বিচার হোক।’’
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সাবালিকা। তিনি আমাদের দলের সঙ্গেও যুক্ত নন। আইন আইনের পথে চলবে। এ নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই।’’