ছবি: সংগৃহীত।
রেশন দুর্নীতির অভিযোগে সদ্য ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে চলছে তাঁকে জেরা করার পর্ব। পাশাপাশি পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তেও ইডি দফতরে লেগে রয়েছে প্রাক্তন এবং বর্তমান প্রশাসনিক কর্তাদের যাতায়াত। এর মধ্যেই মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ ইডির একটি দল এসে হাজির হল এক সাইকেলের দোকানে।
মধ্য কলকাতার বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের অফিসপাড়ায় সাদামাটা দোকান। সকাল থেকে সন্ধে গ্রাহকের ভিড় না থাক সারি সারি সাইকেলের ভিড় লেগে থাকে দোকানের সামনে। এই দোকানেই মঙ্গলবার শেষ দুপুরে হাজির হয় ইডি। সেই সময় কিছুটা সুনসান অফিসপাড়ার এই চত্বর। তবে ইডি আসার খবর ছড়িয়ে পড়ল কিছু ক্ষণের মধ্যেই। এত দিন কাগজে, টিভিতে দেখা ইডিকে দেখতে ভিড়ও জমে এলাকায়। কিন্তু হঠাৎ সাইকেলের দোকানে ইডির কর্তারা কেন? জানা গেল, সাইকেল কিনতে নয়, আসলে সাইকেলের দোকানে চলছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দাদের তল্লাশি।
রাজ্যে রেশন বণ্টন এবং পুর নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে ব্যস্ত ইডি। তারও আগে থেকে ইডির হাতে রয়েছে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত। যে তদন্ত দেরি করার জন্য ইতিমধ্যেই আদালতের ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। মঙ্গলবার সেই মামলার তদন্তের সূত্রেই হাওড়া এবং কলকাতা মিলিয়ে মোট চার জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। এর মধ্যে মনোজ মানহোতের বাড়ি, পার্ক স্ট্রিট এবং এজেসি বোস রোড এলাকার দু’টি অফিসের পাশাপাশি মধ্য কলকাতার বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের এই সাইকেল দোকানটিও ছিল।
ইডি সূত্রে খবর নিয়োগ মামলার তদন্তে গ্রেফতার ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেই এই সাইকেল দোকানের মালিকের নাম পেয়েছে তারা। একদা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থা লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের কর্মী সুজয় বহু ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে টাকা ঘুরিয়েছেন এবং কালো টাকা সাদা করেছেন বলে তদন্তকারীদের ধারণা। সেই সব টাকা সুজয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ঘুরে কোন কোন হাতে পৌঁছেছে, তার খোঁজ করতে নেমেই একের পর এক নাম আসে ইডির কাছে। বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের এই সাইকেলের দোকানের মালিকের নামও ইডি জানতে পারে সুজয়ের টাকার গতিপথের সূত্র ধরেই।
মঙ্গলবার সেই সূত্রেই ওই সাইকেলের দোকানে তল্লাশি চালায় ইডি। তার পাশাপাশি তল্লাশি চালানো হয় হাওড়ার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মনোজের বাড়িতেও। এর নামও কাকুর টাকার খোঁজ করতে নেমেই পেয়েছে ইডি। তবে মনোজকে স্থানীয়রা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বলে জানালেও ইডি সূত্রে খবর, তিনি বিভিন্ন সংস্থার এন্ট্রি অপারেটরের কাজ করতেন।