শান্তি প্রসাদ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
চাকরি বিক্রির এজেন্ট এবং রাজনৈতিক নেতা— দু’তরফের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখে চলতেন নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার শান্তিপ্রসাদ সিংহ। এসএসসির উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের নতুন অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে বহু রাজনৈতিক নেতার দহরম মহরম ছিল। তাঁর হাত ধরে এই রাজনৈতিক নেতাদের কাছে পৌঁছে যেত এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও, সন্দেহ সিবিআইয়ের।
বৃহস্পতিবার নিয়োগ মামলার শুনানি ছিল নিম্ন আদালতে। আদালতে হাজির করানো হয়েছিল শান্তিপ্রসাদকেও। সেখানেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানায়, সম্প্রতি যে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে এসেছে, তাতে স্পষ্ট এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্যতম বড় মাথা ছিলেন এই শান্তিপ্রসাদই। তদন্তে জানা যাচ্ছে, যে এজেন্ট বা দালালেরা অর্থের বিনিময়ে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি বিক্রি করতেন, তাঁদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখে চলতেন শান্তিপ্রসাদ। বস্তুত শান্তিপ্রসাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই এই অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার ফিকির বার করতেন ওই দালালেরা।
একই ভাবে এই শান্তিপ্রসাদের সঙ্গে বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের যোগ থাকার প্রমাণও পেয়েছেন বলে জানিয়েছে সিবিআই। তাদের বক্তব্য, শান্তিপ্রসাদের যেমন বহু এজেন্টের সঙ্গে যোগ ছিল, তেমনই অজস্র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে ভাল যোগাযোগ ছিল। অনৈতিক নিয়োগের সূত্রেই এসএসসির উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধানের সঙ্গে এই যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল রাজনৈতিক নেতাদের। শুধু তা-ই নয় শান্তিপ্রসাদ যেমন বহু নথি নষ্ট করেছেন, তেমনই এসএসসির বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি বেআইনি ভাবে পৌঁছেও দিয়েছেন অনেকের কাছে। তদন্তকারীদের সন্দেহ, শান্তিপ্রসাদের হাত ধরেই এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত বহু তথ্য পৌঁছে যেত রাজনৈতিক নেতাদের কাছেও।
উল্লেখ্য, এই প্রথম শান্তিপ্রসাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ আনল সিবিআই। আদালতে তারা বলেছে, শান্তিপ্রসাদ দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি বিক্রি ছাড়াও নিয়োগের জন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছিলেন। আইন ভেঙে এসএসসির বিভিন্ন নথিও অনেককে পাঠিয়েছিলেন বলে সিবিআইয়ের দাবি।
যদিও শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত বলেন, চার্জশিটের পর থেকে একই কথা বলে আসছে সিবিআই। আগে ওঁরা বলতেন, শান্তিপ্রসাদ প্রভাবশালীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এ বার বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাঁর।