গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
কুন্তল ঘোষের করা মন্তব্যের জবাব দিল ইডি। আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানাল, কুন্তল তাদের বিরুদ্ধে একটি 'গুরুতর' অভিযোগ এনেছিলেন। যার এক বর্ণও সত্য নয়।
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। নিয়োগ মামলার শুনানির জন্য সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পৌঁছতেই কুন্তলকে অন্যান্য দিনের মতো ঘিরে ধরেছিলেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। কুন্তলও তাঁদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন নিজের মতো করে। কখনও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আংটি প্রসঙ্গে প্রশ্ন শুনে, হাত তুলে বলছিলেন, ‘‘আমার হাতে আংটি নেই, ঘামাচি আছে’’। কখনও তাপস মণ্ডলকে নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন। এই সময়েই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তকারী দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি-সিবিআইকে নিয়েও মন্তব্য করতে শোনা যায় কুন্তলকে। তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা বলেন, ‘‘বিজেপির মুখপাত্র আর কেন্দ্রীয় এজেন্সির মুখপাত্র এক। তা হলে তদন্ত কোন দিকে এগোচ্ছে ভাবুন!’’ বৃহস্পতিবার কুন্তলের সেই মন্তব্যেরই প্রতিবাদ জানিয়েছে ইডি।
বৃহস্পতিবার নগর দায়রা আদালতে নিয়োগ মামলায় শুনানি ছিল কুন্তলের। বিচারক বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতেই ইডি ক্ষোভের কথা জানায়। আদালতে ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘কুন্তল ঘোষ একটি গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন। উনি বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা রাজনৈতিক মুখপাত্র। কিন্তু আমরা কারও মুখপাত্র নই, আমরা কোনও রং দেখি না। দুর্নীতিবাজদের খুঁজে বার করতে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা শুধু দুর্নীতিবাজদেরই ধরি।’’ কুন্তলের তরফে যদিও এর কোনও জবাব আসেনি।
বস্তুত, বৃহস্পতিবার আদালত চত্বরে পৌঁছনোর পর থেকেই কুন্তল ছিলেন একেবারে চুুপচাপ। সাধারণত কুন্তল সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কিছু না কিছু বলেই থাকেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার তাকে একাধিক প্রশ্ন করা হলেও কুন্তল কোনও জবাব দেননি। কুন্তলের এই আচমকা নীরবতা কি ইডি-সিবিআই নিয়ে মন্তব্য এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতিরই জের?
সম্প্রতিই কেন্দ্রীয় দুই তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগও করেছিলেন কুন্তল। তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলার জন্য তাঁকে তদন্তকারীরা ক্রমাগত 'চাপ' দিচ্ছেন জানিয়ে সিবিআই এবং ইডির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও জানান।এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় দুই সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কলকাতা হাই কোর্ট স্থগিতাদেশ দিলে পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে যান কুন্তল। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার আদালতে কুন্তলের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাল ইডি।
আপাতত কুন্তলকে আরও দেড় মাস অর্থাৎ ১৯ জুন পর্যন্ত হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে ইডি। আদালতের সময় বাঁচাতে পার্থের সঙ্গে কুন্তলের শুনানি করানোর পরামর্শও দিয়েছে। অন্য দিকে, কুন্তলের তরফে বৃহস্পতিবার কোনও জামিনের আবেদন করা হয়নি আদালতে।