জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় (বাঁ দিকে), কুন্তল ঘোষ (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
নিয়োগ মামলায় ধৃত তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তল ঘোষের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করতে গিয়ে ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট’ (ইডি)-এর আইনজীবীর মুখে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। ইডির সওয়াল, ১৩০ জন চাকরিপ্রার্থীর প্রত্যেকের কাছ থেকে ৮ লক্ষ করে টাকা নেওয়া হয়েছিল। সেই টাকা গিয়েছে ‘প্রভাবশালী’দের কাছে। যে ‘প্রভাবশালীর’ তালিকায় রয়েছে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামও।
কুন্তলের ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষ শুক্রবার। শুক্রবারই তাঁকে আবার আদালতে তোলে ইডি। জামিনের আবেদন জানান যুবনেতার আইনজীবী। কিন্তু কুন্তলকে জামিনে মুক্তির দাবির জোরদার বিরোধিতা আসে ইডির তরফে। এই প্রেক্ষিতে ইডির আইনজীবী আদালতে সওয়াল করে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে এসেছে, ১৩০ জনকে বেআইনি ভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল ৮ লক্ষ টাকা করে। এ ছাড়াও নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক, উচ্চ প্রাথমিক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগের জন্যও এ ভাবে টাকা তোলা হয়েছিল। সেই টাকা গ্রহণ করেছিলেন কুন্তল বা তাঁর কোনও সহযোগী। সেই টাকা হাতবদল হয়ে পৌঁছে যেত তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ‘প্রভাবশালী’দের পকেটে। সরাসরি পার্থের কাছেও টাকা পৌঁছত বলে দাবি করেছে ইডি। চাকরির বিনিময়ে টাকা তোলা এবং সেই টাকার গতিপথ নিয়ে বিশদ তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি। জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবীর দাবি, এই মামলায় কুন্তল ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ চরিত্র। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া ঠিক হবে না। কুন্তলকে জেল হেফাজতেই রেখে দেওয়ার সওয়াল করা হয় ইডির তরফ থেকে। যাতে প্রয়োজনে জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন ইডির আধিকারিকরা। কুন্তলের আইনজীবী রাজা সেনগুপ্তের পাল্টা দাবি, ইডি যে দাবি করছে, তার সপক্ষে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্যপ্রমাণ দেখাতে পারেনি। কুন্তলের হেফাজত থেকে এক টাকাও উদ্ধার হয়নি। তাঁর প্রশ্ন, তা হলে কুন্তলকে হেফাজতে রেখে কী সুবিধা হচ্ছে ইডির?
গত বছর ২১ অক্টোবর ইডি গ্রেফতার করে যুবনেতা কুন্তলকে। তার পর থেকে তিনি রয়েছেন তাদেরই হেফাজতে। শুক্রবার তাঁর জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী। কিন্তু বিস্ফোরক অভিযোগ করে তাঁর জামিনের তীব্র বিরোধিতা করে ইডি।