—প্রতীকী ছবি।
আগের দিনই জেল থেকে হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (বালু) মল্লিক। আর পরের দিন, বুধবার সেই হাসপাতালেই হাজির হল ইডির দল। স্বভাবতই তৈরি হল জল্পনা। তবে কি মন্ত্রীকে জেরা করতেই হাজির তদন্তকারীরা? কারণ, জেলে গিয়ে রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে ইডি জেরা করতে পারবে বলে ইতিমধ্যেই নিম্ন আদালত জানিয়েছে।
যদিও এ দিন জ্যোতিপ্রিয় যেখানে ভর্তি ছিলেন, তদন্তকারীরা তার ধারকাছও মাড়াননি বলে ইডি সূত্রের দাবি। কয়েকশো কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার মামলায় ধৃত, এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, ব্যবসায়ী তথা একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের মালিক কৌস্তুভ রায়কে জেরা করতেই তাঁরা হাসপাতালে গিয়েছিলেন বলে ইডি সূত্রের খবর। প্রায় দু’মাস ধরে কৌস্তুভ অসুস্থতার কারণে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে তিনি উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি।
এ দিন হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শরীরের বাঁ দিকে অসাড়তা অনুভব করছেন জ্যোতিপ্রিয়। কেন এমন হচ্ছে, তা পরীক্ষা করে দেখতে চাইছেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি হাই-সুগারের সমস্যা রয়েছে তাঁর। ভর্তির পর থেকে এসএসকেএমের কার্ডিয়োলজি বিভাগের কেবিনেই রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। তাঁর চিকিৎসার জন্য স্নায়ুরোগ, এন্ডোক্রিনোলজি, মেডিসিন, নেফ্রোলজি, ইউরোলজি, কার্ডিয়োলজি বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এ দিন বিকেলে তাঁর মস্তিষ্ক ও শিরদাঁড়ার এমআরআই করা হয়েছে। ইউরোলজি থেকে ইউএসজি করতেও বলা হয়েছে। এসএসকেএমে ইডির উপস্থিতি নতুন নয়। গত প্রায় চার মাস সেখানে ভর্তি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। বহু চেষ্টা করেও তাঁর গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে ব্যর্থ ইডি। সেই সূত্রেই সম্প্রতি বেশ কয়েক বার হাসপাতালে দেখা গিয়েছে ইডিকে।
জ্যোতিপ্রিয়ের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। বুধবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, ‘‘এটা তো নতুন কিছু নয়। এসএসকেএম এখন চোরেদের অভয়ারণ্য! তৃণমূলের যে-ই চুরি করে ধরা পড়েন, তিনিই সেখানে গিয়ে শুয়ে পড়েন। কাকু শুয়ে আছেন। বালুও গেলেন। কাকুর কী রোগ? মানসিক চাপ। এত ভাল হাসপাতাল, যে দু’মাসের বেশি সময় ধরে সেই চাপ সারাতে পারছে না!’’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘এর আগে তদন্তের মুখে পড়ে বা গ্রেফতার হয়ে মদন মিত্র, অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডল সেফ হাউজ়ে থেকেছেন। কালীঘাটের কাকু হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রিয় বালু ভাবছেন, তিনিই বা এসএসকেএমে যাবেন না কেন! আর এখানে কার কী অসুস্থতা, সেটা ঠিক করে দেওয়ার জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আছেন। তিনি বলে দিলেই যথেষ্ট!’’
রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ আবার পাল্টা বলেছেন, ‘‘কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে নিয়ে কী করা হবে, বিরোধীরাই তা ঠিক করে দেবেন? হাসপাতাল, চিকিৎসকের দরকার নেই! প্রয়োজনে ওঁরা আদালতে যান, সেখান থেকে আদেশ নিয়ে আসুন!’’