(বাঁ দিকে) জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বাকিবুর রহমান (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে ধৃত রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর আপ্তসহায়ক অমিত দে জানালেন, ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান মন্ত্রীর দফতরে আসতেন। তবে তিনি নিজে কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন বলেই দাবি করেছেন অমিত।
শুক্রবারের পর শনিবারও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। সেই মতো সিজিও কমপ্লেক্সে তিনি হাজিরা দেন। প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। ইডি সূত্রে খবর, অমিতের মোবাইল ফোন থেকে নানা রকম তথ্য ঘেঁটে দেখা হয়। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি ইডি দফতর থেকে বেরোন।
অমিতকে সিজিও কমপ্লেক্সের বাইরে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকেরা। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘‘বাকিবুরকে চিনতেন? মন্ত্রীর বাড়িতে কি তাঁর যাতায়াত ছিল?’’ উত্তরে অমিত বলেন, ‘‘চিনতাম। বাড়িতে আসতেন না। অফিসে আসতেন।’’ অমিত আরও বলেন, ‘‘আমি দুর্নীতি নিয়ে কিছু জানি না। আমাকে সে বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসাও করা হয়নি। আমি যে হেতু ওঁর সঙ্গে থাকি, তাই কিছু জানি কি না, জিজ্ঞেস করা হয়েছে। আমি যতটা জানি, আধিকারিকদের বলেছি।’’
অমিতের পাশাপাশি ইডির দফতরে শনিবার গিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়ের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাস। তাঁর বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছিল মেরুন ডায়েরি, যা ইডির তদন্তে উঠে এসেছে। অভিজিৎ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ সিজিও থেকে বেরিয়ে যান।
বৃহস্পতিবার জ্যোতিপ্রিয়ের সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশির পাশাপাশি অমিতের নাগেরবাজারের তিনটি ফ্ল্যাটেও হানা দেন ইডির আধিকারিকেরা। তিনটি ফ্ল্যাটই তখন বন্ধ ছিল। স্ত্রী, বৃদ্ধা মা, সন্তানকে নিয়ে ছুটি কাটাতে পুরী গিয়েছিলেন অমিত। ফলে তিনটি ফ্ল্যাটের কোনওটিতেই ঢুকতে পারেননি কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা। গেটের বাইরে পাহারায় ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। অপেক্ষা করছিল ইডিও। শেষ পর্যন্ত ভুবনেশ্বর থেকে বিমান ধরে কলকাতায় ফিরে আসেন অমিত। বিমানবন্দর থেকে সপরিবার অমিতকে গাড়িতে চাপিয়ে বাড়ি নিয়ে আসে ইডি। খোলা হয় ফ্ল্যাটের দরজা। শুরু হয় নতুন তল্লাশি পর্ব।
নাগেরবাজারের দু’টি অ্যাপার্টমেন্টে জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্তসহায়ক অমিতের মোট তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে একটি অ্যাপার্টমেন্টের নাম ‘ভালবাসা’। অন্যটির নাম ‘পারুল’। দু’টি অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে ৫০০-৬০০ মিটারের দূরত্ব। তবে ‘পারুল’-এর ফ্ল্যাটে এখন আর থাকেন না অমিত। ‘ভালবাসা’ অ্যাপার্টমেন্টের দু’টি ফ্ল্যাটে থাকেন তিনি। সেখানে প্রায় ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালায় ইডি। এর পর শুক্রবার ইডির দফতরে হাজিরা দেন অমিত। রাতে সেখান থেকে বার হন। তার পর শনিবার ফের তাঁকে তলব করে ইডি।