সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন ইডি অফিসারেরা। ভাঙচুড় করা হয় তাঁদের গাড়ি। — ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনার মামলায় দ্রুত শুনানি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করল ইডি। মঙ্গলবার ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী মামলাটির দ্রুত শুনানির আবেদন করেন। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, নির্ধারিত দিনেই শুনানি হবে। এখন দ্রুত শুনানি সম্ভব নয়। আগামী ৬ মার্চ এই মামলার শুনানি।
মঙ্গলবার আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইডির আইনজীবীর সওয়াল করেন, ইডি আধিকারিকদের উপর আক্রমণের ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে যৌথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চ। এই বেঞ্চ সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। ফলে সিট তদন্ত করতে পারছে না। অভিযুক্তকে ধরা যাচ্ছে না। এমনকি, সব এফআইআরের উপরও স্থগিতাদেশ রয়েছে। এই বিষয়ে কোনও তদন্তই হচ্ছে না। সিট গঠনের নির্দেশকে রাজ্য চ্যালেঞ্জ করেছে। ইডিও চ্যালেঞ্জ করছে বলে জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, মূল অভিযুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দ্রুত শুনানি না করলে তথ্য এবং নথি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আপনাদের তদন্তে তো স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি!’’ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এখনই দ্রুত শুনানি করা সম্ভব নয়। নির্ধারিত দিনেই শুনানি হবে। অর্থাৎ, আগামী ৬ মার্চ এই মামলার শুনানি হবে বলে জানান প্রধান বিচারপতি।
ইডির আইনজীবীর বক্তব্য, পিএমএলএ মামলায় তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডি অফিসারদের উপর আক্রমণের ঘটনা ফৌজদারি অপরাধ। কিন্তু ফৌজদারি অপরাধের কোনও তদন্ত হচ্ছে না। তা নিয়ে দ্রুত তদন্ত শুরু হওয়া জরুরি। তিনি জানান, পিএমএলএ মামলায় অভিযুক্তকে আমরা তলব করেছি। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি। পুলিশকে তদন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না, এমন অভিযোগও উঠছে ইডির বিরুদ্ধে। প্রধান বিচারপতি অবশ্য ওই আর্জিতে সাড়া দেননি।
সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হন ইডির আধিকারিকেরা। ঘটনায় সিট গঠনের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। মাথায় ছিল সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশের এক জন করে এসপি পদমর্যাদার আধিকারিক। এই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তিনি জানান, পুরো তদন্তের উপর নজরদারি চালাবে আদালত। এই মামলায় কারা তদন্ত করবে, সিবিআই না রাজ্য, তা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি এবং রাজ্য দু’পক্ষই। গত ৭ ফেব্রুয়ারি সেই মামলা সংক্রান্ত একটি নির্দেশে আগামী ৬ মার্চ পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেয় হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ আপাতত স্থগিত থাকবে। কোনও এফআইআরের উপরই তদন্ত করতে পারবে না রাজ্য পুলিশও। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। ৬ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলেও জানিয়েছিল বেঞ্চ। এর পর ইডি দ্রুত শুনানি চেয়ে ফের আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাতে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, নির্ধারিত দিন অর্থাৎ আগামী ৬ মার্চ হবে শুনানি। দ্রুত শুনানি সম্ভব নয়।