জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মন্ত্রী বদল হয়েছে, কিন্তু রেশন দুর্নীতিতে কোনও বদল হয়নি। ইডি সূত্রে খবর, রেশন ‘দুর্নীতি’তে কারচুপি পর্ব চলার ইঙ্গিত মিলেছে একটি রেজিস্টার খাতায়। গত সেপ্টেম্বর মাসে রেশন সংক্রান্ত দুর্নীতির তদন্তে তল্লাশি চালিয়ে তদন্তকারীরা যে রেজিস্টার খাতা উদ্ধার করেছিলেন, তাতেই দুর্নীতি চলার তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। মঙ্গলবার নগর দায়রা আদালতে ইডি যে চার্জশিট পেশ করেছে, তাতেই এই সমস্ত প্রসঙ্গ রাখা হয়েছে বলে ওই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
ইডি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, রেশনের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করার সময় তা নিয়ে নয়ছয় করতেন বালু-‘ঘনিষ্ঠ’ মিল ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান এবং তাঁর সহযোগীরা। এই চক্রে অনেকে যুক্ত আছেন। এমনকি, রেশন ডিস্ট্রিবিউটরেরাও কেউ কেউ দুর্নীতিতে জড়িত। তাঁদের কাছ থেকে যত বস্তা গম চাওয়া হত, তার চেয়ে ৩০-৪০ শতাংশ কম সরবরাহ করতেন তাঁরা। ওই পরিমাণ গম নিজেরা আত্মসাৎ করতেন। রেশন ডিলার এবং ডিস্ট্রিবিউটরেরাও এ ভাবে লাভবান হতেন। বেশ কয়েক জন আধিকারিকও এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন বলে জানা যায়। রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (যিনি রাজনৈতিক মহলে বালু নামে সমধিক পরিচিত)-এর মদতেই এই রেশন দুর্নীতির চক্র চলত বলে দাবি ইডি সূত্রের।
২০২১ সালে তৃণমূল সরকার রাজ্যে তৃতীয় বার ক্ষমতায় এলে অবশ্য জ্যোতিপ্রিয়কে খাদ্য দফতর থেকে বন দফতরে পাঠানো হয়। কিন্তু খাদ্য দফতরের মন্ত্রী বদলালেও দুর্নীতি বন্ধ হয়নি বলে চার্জশিটে দাবি করেছে ইডি। সে ক্ষেত্রে দূরে থেকে জ্যোতিপ্রিয় খাদ্য দফতরকে নিয়ন্ত্রণ করতেন কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে ১৬২ পাতার চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, চার্জশিটে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়, মিল ব্যবসায়ী বাকিবুর ছাড়াও রয়েছে তাঁদের নামে থাকা ১০টি ভুয়ো সংস্থার নাম। এই সংস্থাগুলির মাধ্যমে দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর।