মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ছবি: আনন্দবাজার অর্কাইভ।
মন্ত্রীর বাড়ি, তাঁর আপ্তসহায়কের বাড়ি এবং ঘনিষ্ঠের বাড়ির পর মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পৈতৃক ভিটেতেও পৌঁছেছে ইডি। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা পৌঁছেছিলেন সল্টলেকে জ্যোতিপ্রিয়ের দু’টি বাড়িতে। এর কয়েক ঘণ্টা পরে বেনিয়াটোলা লেনে জ্যোতিপ্রিয়ের পৈতৃক বাড়িতেও পৌঁছে যায় ইডির আধিকারিকদের অন্য একটি দল। শুরু হয় তল্লাশি। পাশাপাশি ইডির একটি দল পৌঁছে যায় মন্ত্রীর আপ্তসহায়কের বন্ধুর বাড়িতেও।
রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। সম্প্রতি রেশন দুর্নীতির অভিযোগে ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের বাড়িতে ইডি তল্লাশি অভিযান চালানোর পরই জ্যোতিপ্রিয়ের নাম প্রকাশ্যে আসে। এর পরে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা নাগাদ আচমকাই জ্যোতিপ্রিয়ের দু’টি বাড়িতে পৌঁছে যায় ইডির দল। একই সঙ্গে তাঁর আপ্তসহায়ক অমিত দে-র দু’টি ফ্ল্যাটেও তল্লাশির জন্য পৌঁছয় ইডি। সাতসকালেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় মন্ত্রীর ঠিকানায় চলতে থাকে ম্যারাথন তল্লাশি। এরই মধ্যে হাওড়ার কদমতলায় জ্যোতিপ্রিয়ের এক ঘনিষ্ঠের বাড়িতেও হাজির হন ইডির ছয় আধিকারিক। তার কিছু ক্ষণের মধ্যে বেনিয়াটোলা লেনে জ্যোতিপ্রিয়ের পৈতৃক ভিটেতেও পৌঁছে যায় ইডি।
বেনিয়াটোলা লেনের এই বাড়িতে অবশ্য মন্ত্রী এখন আর থাকেন না। তবে তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা থাকেন। ইডির আধিকারিকদের দলটি সেই বাড়িতে ঢুকে পড়ে তল্লাশি চালাতে শুরু করে। মন্ত্রীর বাড়িতে এই তল্লাশি অভিযান নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি শুনেছি, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইডির গোয়েন্দারা তল্লাশির নামে চিনির কৌটো উল্টে দেয়। ঘিয়ের শিশি উল্টে দেয়। বাড়ির মেয়েদের কত রকম পোশাক-আশাক থাকে, তাদের ক’টা শাড়ি আছে— তারও তল্লাশি নেয়। এই সব আমরা সহ্য করব না। বালু (জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ডাকনাম ) সুগারের রোগী। ওর যদি কিছু হয়, তা হলে আমি বিজেপি এবং ইডির বিরুদ্ধে এফআইআর করব।’’
অন্য দিকে, মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক অমিতকে বাড়িতে না পেয়ে তাঁর সন্ধান করছিলেন ইডির আধিকারিকেরা। বেলা গড়াতে দেখা যায়, ইডির একটি দল পৌঁছেছে বেলেঘাটায় মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক অমিতের বন্ধু রনি দে-র বাড়িতেও। যদিও রেশন দুর্নীতির তদন্তে মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক বা পিএ-র বন্ধুর ভূমিকা কী, তা স্পষ্ট নয়। এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি ওই ছ’টি ঠিকানাতেই ইডির তল্লাশি চলছে।
তবে পরে বিকেলে জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্ত সহায়ক অমিত সপরিবারে বাড়ি ফিরে আসেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর বয়স্ক মা, স্ত্রী, এবং সন্তান। তাঁদের নিয়েই অমিত তাঁর নাগের বাজারের ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন।