প্যারোলে থাকাকালীন গৌতম পুলিশের নজরদারিতে ছিলেন।
‘প্যারোলে’ (অন্তর্বর্তিকালীন জামিন) থাকাকালীন মামলার একাধিক সাক্ষীকে প্রভাবিত করেছেন রোজ় ভ্যালি কর্তা গৌতম কুন্ডু, আদালতে গুরুতর এই অভিযোগ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
সম্প্রতি মায়ের অসুস্থতার কারণে গৌতমকে সাত দিনের প্যারোল মঞ্জুর করে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতার একটি বহুতল আবাসনের ফ্ল্যাটে মায়ের কাছে ছিলেন গৌতম। ৭ অক্টোবর তিনি প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে ফিরে গিয়েছেন। প্যারোলে থাকাকালীন গৌতমের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী আরও এক সপ্তাহ জামিন বৃদ্ধির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ওই আবেদন খারিজ করেন বিচারক।
সম্প্রতি আদালতে তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র গৌতমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ইডি-র অভিযোগ অনুযায়ী, সাত দিন অন্তর্বর্তী জামিনে থাকাকালীন গৌতম মামলার সাক্ষীদের শাসানি দিয়ে প্রভাবিত করেছেন। ওই ঘটনার তদন্তও শুরু করেছে ইডি।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, রোজ় ভ্যালির মালিকাধীন দক্ষিণ কলকাতার একটি বিলাসবহুল হোটেল রয়েছে। সংস্থার কয়েক জন ডিরেক্টরের মাধ্যমে ওই হোটেল পরিচালনা করা হয়। ইডি-র অভিযোগ, প্যারোলে থাকাকালীন হুমকি দিয়ে ওই সংস্থার দুই ডিরেক্টরকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করেছেন গৌতম। তা ছাড়া আরও কয়েক জন সাক্ষীকে তিনি শাসানি দিয়েছেন বলেও তদন্তকারী সংস্থার কাছে অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে নানা প্রশ্নও উঠেছে।
আদালতের নির্দেশ অনুসারে, প্যারোলে থাকাকালীন গৌতম পুলিশের নজরদারিতে ছিলেন। তা হলে তিনি কী ভাবে সাক্ষীদের প্রভাবিত করেছিলেন? শারীরিক ভাবে তিনি ওই সাত দিন মায়ের ফ্ল্যাট থেকে বার হননি। প্রশ্ন, তা হলে কি ফোনের মাধ্যমে তিনি শাসানি দিয়ে সাক্ষীদের প্রভাবিত করেছিলেন?
আইন অনুযায়ী, সংশোধনাগার থেকে অনুমতি নিয়ে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলা যায়। কিন্তু প্যারোলে থাকাকালীন সেই রকম কোনও নির্দেশ নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। সে ক্ষেত্রে কি গৌতম ওই ফ্ল্যাটে থাকা কোনও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিলেন?
ইডি-র তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই গৌতমের সাক্ষীদের প্রভাবিত করার ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট আকারে আদালতে পেশ করা হবে। ওই রিপোর্টে সমস্ত কিছু বিস্তারিত ভাবে জানানো হবে।
গৌতমের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ সবসময়ই প্রমাণ সাপেক্ষ। তদন্তকারী সংস্থা প্রয়োজনে তাদের অভিযোগ প্রমাণ সমেত আদালতে পেশ করুক। তার পরে আইনি পথে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’