হাওড়া-রাঁচী রুটে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলাচল নিয়ে জল্পনা চাউর হলেও রেল সূত্রের খবর, রুট নির্ধারণের প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। দেশের কোন ‘জ়োন’ ক’টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাবে, তা ঠিক করবে রেল বোর্ড।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেস।
চাপ কমাতে হবে হাওড়া স্টেশনের। ভবিষ্যতে তাই ডানকুনি থেকেই দেশের বিভিন্ন শহরে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো আধুনিক ট্রেন চালাতে চায় পূর্ব রেল। সেই লক্ষ্যে ডানকুনিতে সব রকমের কোচ ছাড়াও আধুনিক ট্রেন-সেট রক্ষণাবেক্ষণের উপযুক্ত ইন্টিগ্রেটেড কোচিং টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা খরচ করে ওই প্রকল্প রূপায়ণ করার কথা।
বিগত ২০২১-২২ অর্থবর্ষের বাজেটে ওই প্রকল্পের ঘোষণা হলেও কোনও টাকা বরাদ্দ হয়নি। চলতি বাজেটে ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ওই প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য। পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরা বলেন, ‘‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর ব্যাপারে আমাদের আগ্রহের কথা রেল বোর্ডকে জানিয়েছি। আপাতত অন্য কোনও স্টেশন থেকে (হাওড়া বা শিয়ালদহ) ওই ট্রেন চালানো হলেও ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আমরা ডানকুনিকেই বেছেছি। রেল বোর্ডকে সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
পূর্ব রেল সূত্রের খবর, ডানকুনিতে আধুনিক কোচিং টার্মিনাল নির্মাণের জন্য রেলের হাতে পর্যাপ্ত জমি রয়েছে। পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারের আশা, আগামী দু’তিন মাসের মধ্যে ডিপিআর বা পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা রিপোর্ট তৈরি হয়ে যাবে এবং ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে চলতি বছরেই। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সেমি হাইস্পিড ট্রেন। ঘণ্টায় সর্বাধিক ১৬০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে সমর্থ ওই ট্রেনের জন্য ট্র্যাক এবং ওভারহেড কেব্ল-সহ সিগন্যালিং ব্যবস্থায় নানা ধরনের পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। হাওড়া-নয়াদিল্লি রুটে সর্বাধিক ১৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো সংস্কারের কাজ আগেই শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে পূর্ব রেল তাদের অংশের কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলবে বলে জানান জেনারেল ম্যানেজার। তিনি জানান, আধুনিক ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ‘কবচ’ ওই সময়ের মধ্যে চালু হবে।
হাওড়া-রাঁচী রুটে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলাচল নিয়ে জল্পনা চাউর হলেও রেল সূত্রের খবর, রুট নির্ধারণের প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। দেশের কোন ‘জ়োন’ ক’টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাবে, তা ঠিক করবে রেল বোর্ড। কয়েক দিন আগে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি রুট নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু হবে। চলতি বছরের শেষে ট্রেন বেরোতে শুরু করবে। যাত্রীদের চাহিদার নিরিখে কলকাতা গুরুত্বপূর্ণ শহর হওয়ায় একাধিক ট্রেন পাওয়া যাবে বলেই পূর্ব রেলের কর্তারা আশাবাদী। সেটা মাথায় রেখেই হাওড়া স্টেশনের চাপ কমাতে ডানকুনিকে বিকল্প টার্মিনাল হিসেবে ভাবা হয়েছে, জানাচ্ছেন রেলকর্তারা। দ্রুত গতির ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে তুলনামূলক ভাবে লাইনের জটও অনেক কম হবে। নতুন টার্মিনালে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ছাড়াও এলএইচবি, আইসিএফ, এমইএমইউ, ইএমইউ-সহ সব ধরনের ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।