Coronavirus in West Bengal

শিয়ালদহে বিআর সিংহ হাসপাতালে কোভিড ইউনিট বানাচ্ছে রেল

পরপর কর্মী-অফিসারের মৃত্যুতে কর্মী মহলে ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করায় এ বার নড়েচড়ে বসেছেন রেল-কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৯
Share:

ছবি সংগৃহীত।

কর্মী-আধিকারিক মিলিয়ে কয়েক মাসে পূর্ব রেলে করোনা সংক্রমণের জেরে মারা গিয়েছেন সাত জন। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে হাওড়া অর্থোপেডিক হাসপাতালে। প্রাণহানিতে পূর্ব রেলের পরিসংখ্যান সারা দেশের নিরিখে ব্যতিক্রমী বলে জানান অফিসারদের একাংশ। রেলের কর্মী মহলের অভিযোগ, কোভিড হাসপাতালের তকমা পেলেও হাওড়া অর্থোপেডিক হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার পরিকাঠামো নেই।

Advertisement

পরপর কর্মী-অফিসারের মৃত্যুতে কর্মী মহলে ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করায় এ বার নড়েচড়ে বসেছেন রেল-কর্তৃপক্ষ। শিয়ালদহে রেলের সুপার স্পেশালিটি সুবিধাযুক্ত বিআর সিংহ হাসপাতালে উন্নততর চিকিৎসার জন্য পৃথক কোভিড ইউনিট তৈরি হচ্ছে। ওই হাসপাতালের স্বতন্ত্র কয়েকটি ভবনকে নিয়ে রেড জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করে সপ্তাহখানেকের মধ্যে এই পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে বলে খবর। রেলকর্মী সংগঠনগুলির অভিযোগ, হাওড়া অর্থোপেডিক হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা হলেও তীব্র শ্বাসকষ্ট বা অন্য কোনও শারীরিক জটিলতা রয়েছে, এমন রোগীদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ছিল না। পুরোদস্তুর অর্থোপেডিক হাসপাতাল হিসেবে পরিচিতি একটি প্রতিষ্ঠানকে রাতারাতি কোভিড হাসপাতালে পরিণত করায় অস্থি চিকিৎসাও ব্যাহত হচ্ছিল। রেল সূত্রের খবর, ওই সব সমস্যা দূর করার পাশাপাশি করোনা রোগীদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেই বিআর সিংহ হাসপাতালে নয়া পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। এত দিন হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের আইসোলেশনে রেখে পরীক্ষার পরে সংক্রমণ প্রমাণিত হলে চিকিৎসার জন্য তাঁদের হাওড়ায় পাঠানো হত। কম সংক্রমণের রোগী ছাড়াও যাঁদের অসুস্থতা বেশি, তাঁদের চিকিৎসা এ বার বিআর সিংহ হাসপাতালেই হবে।

এর মধ্যে শিয়ালদহে ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের কার্যালয়ের ভবনেও কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে ওই ভবনের অপারেশন কন্ট্রোল বিভাগের কিছু কর্মী-আধিকারিকের দেহে। পরিস্থিতি এমনই যে, সংক্রমণের আশঙ্কায় ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার, সহকারী ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার, সিনিয়র ডিভিশনাল ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াও কয়েক জন শীর্ষ আধিকারিককে ১৪ দিনের জন্য গৃহ-নিভৃতবাসে যেতে হয়েছে। রেলের খবর, ডিআরএম বিল্ডিংয়ের অপারেশনাল কন্ট্রোল বিভাগে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এক আধিকারিক এবং বেশ কয়েক জন কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামলাতে বৃহস্পতি থেকে রবিবার পর্যন্ত ওই ভবন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়েছিল। এ বার ওই সময়সীমা আগামী বুধবার পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ভবনে জীবাণুমুক্তির কাজ হলেও সংক্রমণের আশঙ্কা পুরোপুরি কাটেনি। অপারেশনাল কন্ট্রোল বিভাগ সম্পূর্ণ বাতানুকূল। ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কম্পিউটার এবং বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র রয়েছে ওই বিভাগে। বাতানুকূল পরিসরে একসঙ্গে অনেক কর্মীর উপস্থিতির জেরেই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, ‘‘পরিষেবা ছাড়াও মূলত রক্ষণাবেক্ষণের কর্মীরা আসছেন। এই অবস্থায় সংক্রমণ ঠেকানো ছাড়াও চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা দরকার। নইলে ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কা আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement